আওয়ামী স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সৈকত চন্দ্র দে ও শহীদ পারভেজ- এর পরিবারকে তারেক রহমানের নির্দেশে সমবেদনা ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকার শনির আখড়া মাতুয়াইল মৃধাবাড়ি এলাকায় এই মানবিক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।স্বৈরাচার বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ সৈকত চন্দ্র দে এবং শহীদ পারভেজের পরিবারের প্রতি তারেক রহমানের সমবেদনা ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ বিএনপির পক্ষ থেকে একটি মানবিক সংগঠন। যেটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের চেয়ারম্যান হওয়া আগেও তিনি আন্দোলনে ও ফ্যাসিবাদের নির্যাতনে পঙ্গুত্ব বরন, চোখ হারিয়ে যাওয়া ও শহীদদের পরিবারের খোঁজ নিয়েছেন। সাধ্যমতো সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, রাজনীতি তো হচ্ছে মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য, শুধু আমি এমপি হবো এবং রাষ্ট্রের বড় বড় পদে আসীন হবো, এজন্যই রাজনীতি নয়। এটি নির্ধারণ করবে আমি নিজেকে কতটুকু মানবসেবায় নিয়োজিত রেখেছিলাম, তার ওপরেই তো মানুষ আমাকে বিবেচনা করবে, তাকে জনপ্রতিনিধি করলে সত্যিকারের অর্থেই সে এলাকার ভালো কাজ করবে। রিজভী বলেন, একটা ভয়ঙ্কর দুঃসময় আমরা অতিক্রম করে এসেছি। এখান থেকে আমি যদি অন্তবর্তী সরকারের সমালোচনা করে বের হয়ে যাই, কোনো গোয়েন্দা পুলিশ এসে আমাকে গ্রেফতার করবে না। গ্রেফতার করে আয়নাঘরে নিয়ে যাবে না। নির্ভয়ে পথ চলতে পারি। এই পরিবেশটির জন্যই গত ১৫-১৬ বছর ধরে বিএনপি নিরন্তর সংগ্রাম করেছে। এই সংগ্রামে আমাদের অগণিত কর্মী-নেতারা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। এর একটাই কারণ আমরা কথা বলতে চাই, স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করতে চাই। অন্যের সাথে আমার দ্বিমত থাকতে পারে। কিন্তু তার কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমি জীবনও দিতে পারি। এটাই গণতন্ত্রের মূল মন্ত্র। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বিদেশে কিভাবে জীবন যাপন করেন, দেশের কত টাকা বেতন পান এ বিষয়ে প্রশ্ন করার কারো ক্ষমতা ছিল না- মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে লিখেছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমান, তাকে তুলে নিয়ে গ্রেফতার করে কী অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে! ৭২ থেকে ৭৫ এ শেখ হাসিনার বাবার আমলেও একই ভয়াবহ অবস্থা ছিল। রক্ষী বাহিনীর সেই বীভৎস কাহিনী এখনো অনেকে ভুলতে পারে না, যারা সেই সময় যুবক ছিল। বাবার অপশাসনের কথা যদি মেয়ের আমলে কেউ বলতো তবে তাকে আর ফিরে পাওয়া যেত না। একেবারে দেশটাকে পারিবারিক সম্পত্তি করেছিলেন শেখ হাসিনা। তার পরিবার ও কাছের লোকরা যত কুকর্ম করুক, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না। ‘শেখ হাসিনা এ দেশ থেকে হাজার হাজার লক্ষ-কোটি টাকা পাচার করেছে। এইজন্যই তিনি আন্দোলনকে দমন করেছেন। গণতন্ত্রের কথা শোনেননি, জনগণের কথা শোনেননি।’ এই দেশ আমাদের- এমন মন্তব্য করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, এ দেশ জনগণের, এ দেশকে বাইরে থেকে এসে কেউ গঠন করে দিয়ে যাবে না। কোনো প্রভু এসে এ দেশকে গঠন করতে পারবে না। আমরাই আমাদের দেশকে গঠন করব। এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর আহবায়ক ও সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, ফরহাদ আলী সজীব ও শাহাদত হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আরিফুর রহমান তুষার, সাধারণ রিক্সা শ্রমিক নেতা মন্টু, শ্রমিক নেতা আফজাল ও মিন্টুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে রাজধানীর শনির আখরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সৈকত চন্দ্র দে ও পারভেজ নিহত হন।