বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৭০৮ জন নিহত এবং ২৫ হাজার মানুষের আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এ কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে সংবাদকর্মীদের এ তথ্য জানান তিনি। হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালে ৭০৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৫ হাজার। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে ছাত্ররা যে আন্দোলন শুরু করে তা তীব্রতা পায় জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে। ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে রংপুরের আবু সাঈদসহ সারাদেশে ছয়জন নিহত হওয়ার পর আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করে। এরপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর জুলাই-আগস্টে নিহত এবং আহতদের তালিকা তৈরি করতে ১৫ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। এর প্রধান করা হয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ও কমিটির প্রধান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবিরকে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ৯ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী সারাদেশে অন্তত ৬৩১ জন নিহত, ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। সেটা ছিল প্রাথমিক তালিকা। পরে হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিহতের সংখ্যা ৭০৮ জন বলে উল্লেখ করে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে এই তালিকা দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালে ৭০৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৫ হাজার জন। বাংলাদেশে আসা চীনা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে আহতদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে চীন থেকে একটি মেডিকেল টিম বাংলাদেশে এসেছে। এরই মধ্যে তারা বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে আহত রোগীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। এর মধ্যে চোখের সমস্যা, স্নায়ু রোগ, পঙ্গু হয়ে যাওয়া রোগীদেরকে সরেজমিন দেখেছেন। হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘এই টিম দেশে ফিরে গিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেই রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজন হলে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে। তিনি আরও জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে চীনের টিমটি পাঁচটি হাসপাতালে ১৬০ জন রোগী দেখেছেন। এ সময় তারা ১০৫ জন গুরুতর রোগীর রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছেন। হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ক্রিটিকাল রোগী আছেন তিনজন, যাদের দুইজন আছেন আইসিইউ। পা-হাত কেটে ফেলতে হয়েছে ২৯ জনের। ২৬ জনের চোখে ছররা গুলি লেগেছে। নার্ভে সমস্যা হয়েছে এমন রোগীও আছেন।