খাগড়াছড়িতে মো: মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র দীঘিনালায় গতকালের সংঘর্ষের জেরে রাতভর বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহত হয়েছে তিনজন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দীঘিনালার উদাল বাগান এলাকার ধনরঞ্জন চাকমা (৫০) দীঘিনালায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ঘটনায় মারা গেছে বলে জানা যায়। অন্য দুইজন হলেন খাগড়াছড়ি সদরের জামতলী এলাকার জুনান চাকমা (২০), স্বনির্ভরের বেলছড়ি পাড়ার রুবেল ত্রিপুরা। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মোতায়েন রয়েছে বিপুল পরিমান পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে দীঘিনালা উপজেলায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময়ে অগুনে পুড়ে দেয়া হয়েছে কমপক্ষে ৬০টি দোকান। এসব ঘটনা ঘটার পর রাতেও দীঘিনালা, পানছড়ি ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কয়েকটি স্থানে দুর্বৃত্তরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকটি স্থানে যাতায়াত করতে গিয়ে রাতে দুর্বৃত্তদের বাধার মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ। আবার এসব বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানছড়ির কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, রাত ১১টার দিকে পানছড়ি কলেজ গেট এলাকায় টহল দিতে গেলে দুর্বৃত্তদের বাধার মুখে পড়ে সেনাবাহিনীর টহল দল। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করে অজ্ঞাত যুবকরা পাহাড়ি বাসিন্দাদের কলেজ গেট এলাকায় জড়ো হওয়ার জন্য উসকানি দিয়ে আহ্বান জানায়। পাশাপাশি কলেজ গেট এলাকার পাশে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ের গেট ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তদের আরেকটি দল। দুর্বৃত্তরা নিজেদের পাহাড়ি দাবি করে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাহাড়ি কয়েকজন বাসিন্দা। এর আগে একই দিন রাত ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি শহরের নারাণখাইয়া এলাকায় গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়। দীঘিনালা বোয়ালখালী বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই একটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ছাত্রদের ওপর হামলা চালালে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্রপাত হয়। বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটে আগুন দেয়া হয়। এখন সন্ত্রাসীরা যাকে যেখানে পাচ্ছে মারধর করছে। তবে সাধারণ পাহাড়িরা এসব ঘটনায় জড়িত নয়। খাগড়াছড়ি অধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা জানান, গতকাল রাতে ১২ জন চিকিৎসা নিতে আসে। তার মধ্যে তিনজন মারা যায়। চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের অবস্থা স্টেবল হওয়ায় এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।