পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার চাটমোহর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন (৩৫) কে রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত দশটার দিকে উপজেলার মথুরাপুর তেলপাম্প সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ফারুক উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের কুবিরদিয়ার গ্রামের জামাল সরদারের ছেলে এবং উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব। আর অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন একই ইউনিয়নের খতবাড়ি গ্রামের গোলাপ হোসেনের ছেলে এবং মুলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নাম্বার ওয়ার্ড সদস্য। তিনি বিএনপির সমর্থক বলে জানা গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার রেলবাজারে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে পাবনা-চাটমোহর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। ঘন্টাব্যাপী অবরোধে সড়কের দুই পাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। ফারুকের সাথে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান জানান, শুক্রবার রাত দশটার দিকে দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে মথুরাপুর তেলপাম্পের সামনের চা স্টলে বসে কথা বলছিলেন যুবদল নেতা ফারুক। এমন সময় ৮/১০টি মোটরসাইকেলে মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী সেখানে উপস্থিত হয়ে ফারুকের উপর অতর্কিত হামলা করে রড দিয়ে পেটাতে থাকে। এসময় নেতাকর্মীরা উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে ফেলে। পেটানোর এক পর্যায়ে ফারুক সঙ্গাহীন হয়ে পরলে তাকে ফেলে ফাঁকা কয়েক রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। এসময় তার সাথে থাকা নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত ১১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ঘটনার বিষয়ে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, ঘটনাটি জানার পরেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত থানায় কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতি করে আসছি। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে।তিনি দাবি করেন, এদিন আমি পেট্রোলপাম্পে আমার বাইকে তেল উঠাতে গেলে সেখানে উপস্থিত থাকা ফারুক ও তার লোকজন আমাকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে আমার আত্মীয়-স্বজন আমাকে উদ্ধার করতে আসলে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে মারপিট শুরু হয় ও ফারুক আহত হয়। গুলিবর্ষণের কোন ঘটনা তিনি অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব এইচ ইসলাম হীরা বলেন, ঘটনাটি দলীয় নাকি ব্যক্তিগত তা আমার জানা নেই। তবে আনোয়ার মেম্বার গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নির্বাচন করেছেন। তিনি বিএনপি’র সদস্য কিনা সেটা যাচাই-বাছাই করে জানানো যাবে। যদি সে দলের কেউ হয় তবে অবশ্যই দল তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর হামলার নিন্দা জানাই এবং জড়িতদের বিচার চাই।