ভারত সবসময়ই পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে প্রভুত্ব একটা রাজনীতি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ চন্দ্রিমা উদ্যানের ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এ মন্তব্য করেন। এরআগে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলা ১১টায় সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে আসেন বিএনপি মহাসচিব। সেখানে শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রয়াতের রুহের মাহফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ সময়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ মহিলা দলের কয়েকশ নেতাকর্মী ছিলেন।বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারত তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে তাদের যে রাজনীতি এবং তাদের যে আচরণ, সেটা কোন প্রেক্ষিতে কীভাবে করছেন- সেটা তারাই ভালো বোঝেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি, শুধু বাংলাদেশ নয়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক খুব ভালো যাচ্ছে না। এর প্রধান কারণ যেটা আমার কাছে মনে হয়, ভারত সবসময়ই প্রভুত্ব একটা রাজনীতি এই দেশগুলোর সঙ্গে, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে করছে, যেটা ভারতের জন্য শুভ বয়ে আনবে না, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর জন্যও শুভ হবে না। মির্জা ফখরুল বলেন, পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে, মর্যাদার ভিত্তিতে, পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে এই (ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশীর) সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত বলে আমরা মনে করি। বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনের হাত থেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ মুক্ত হয়েছে। এই বিপ্লবে দেশের অসংখ্য ছাত্র-জনতা, এমনকি নারী ও শিশু প্রাণ দিয়েছেন। এই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নারীদের যে অবদান, সেটাকে আমরা কখনোই অস্বীকার করতে পারবো না। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, দেশে খুব শিগগিরই আজকে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যারা জনগণের রায় ও মতামতের ওপর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কারগুলোকে সম্পন্ন করে দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করবে। এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আমরা বারবার করে বলেছি, দুইবার দেখা করেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে।
প্রতিবারই আমরা বলেছি, যে সংস্কারগুলো করতে চান, সেগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরা এবং সেটার সময় নির্ধারণ করা। যাতে করে সুনির্দিষ্ট একটা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দেয়া যেতে পারে, সেজন্য আমরা তাকে অনুরোধ করেছি। তিনি বলেন, আজকে মহিলা দল তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ নিয়েছে যে, স্বাধীনতা অর্জন করা হয়েছে- এই স্বাধীনতাকে সুসংহত করবার জন্য, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবার জন্য এবং দেশে আইনের শাসন, জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করবার জন্য তারা তাদের সংগ্রামকে অব্যাহত রাখবে।