হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। শেখ হাসিনার বিচার হলে নতুন স্বৈরাচার তৈরি হবে না। আল্লামা সাঈদীর মুক্তি আন্দোলনে নিহত ব্যক্তি, শাপলা চত্বরসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে।’ বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে শহরের ট্রাংক রোডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বন্যার্তদের জন্য হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডারসহ ইসলাম বিরোধী এজেন্ডা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। শেখ হাসিনা সরকার দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে তলাবিহীন ঝুঁড়িতে পরিণত করেছে। ১৬ বছর শাসন করে বঞ্চনা-দুঃখ দিয়ে অর্থনীতিকে ধসিয়ে দিয়েছিল। দৃশ্যমান মেগাপ্রজেক্টের মাধ্যমে মেগা দুর্নীতির আয়োজন করেছে।’
সংগঠনটির জেলা সভাপতি মাওলানা আফজালুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুকের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনী, জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা ইসমাইল হায়দার।
শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনতার বাঁধভাঙা জোয়ার রুখে দেয়ার ক্ষমতা না থাকায় পথ খুঁজে না পেয়ে শেখ হাসিনা আকাশে উড়াল দিয়ে মোদির কাছে চলে গিয়েছে। সেখানে বসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরনে ষড়যন্ত্র করলে ১৮ কোটি মানুষ বরদাশত করবেনা।’
মাওলানা মামুনুল হক আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে ভোটাধিকার হরণ করেছে। বাকস্বাধীনতা হারণ করেছে। নূন্যতম কোনো সমালোচনা বরদাশত করে না। যারাই সমালোচনা করেছে তাদের কাউকে গুম, খুন করেছে। বছরের পর বছর অন্ধকার কারাপ্রকোষ্ঠে বন্দী রেখে নির্যাতন করেছে। মামলার পর মামলা দিয়ে নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। আয়নাঘরসহ নানারকম টর্চার সেল করে মধ্যযুগীয় বর্বরতায় গ্রাস করেছে। ডিজিটাল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দেশের মুক্তিকামী জনতা গণভবনের দিকে ছুটে গিয়েছিল। লেডি ফেরাউনকে মনে হয় জীবদ্দশায় ক্ষমতার মসনদ থেকে সরাতে পারব না। দেশের মানুষ একসময় হতাশ ছিল। আল্লাহ তাদের পাকড়াও করেছেন, তারাও চিন্তা করেনি।’
আলেমসমাজ, বিত্তশালী, প্রবাসী বিত্তশালীরা সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে হেফাজতের শীর্ষ এ নেতা আরো বলেন, ‘একইসাথে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আগস্ট বিপ্লবে নিহত-আহতদের পরিবারের খোঁজখবর নিতে হবে। হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন তাদের সহযোগিতায়ও এগিয়ে আসতে হবে। পরিবারকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।’