পাবনা প্রতিনিধি: দীর্ঘ ৯ বছর পর পাবনার বেড়ায় সিএনজি অটোরিকশা চালক ইমরুল কায়েস ইমরান (২২) হত্যা মামলায় ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা,অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে পাবনার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক জৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্তদের মধ্যে ৩ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি ২ জন পলাতক রয়েছেন। জৈষ্ঠ আইনজীবি পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) দেওয়ান মজনুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত ইমরুল কায়েস ইমরান পাবনার বেড়া উপজেলার জগন্নাথপুর পূর্বপাড়া গ্রামের কালু সরদারের ছেলে। আর দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জগন্নাথপুর পূর্বপাড়া আবুল কালাম (৩৪), রাজনারায়নপুর গ্রামের মোকছেদ আলী (৪৪), মোক্তার হোসেন (৩৭), মাটিরঢালি গ্রামের আপেল মাহমুদ (৪০) ও জাহিদুল ইসলাম (৪৯)। এদের মধ্যে আপেল ও জাহিদুল পলাতক রয়েছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই বিকেলে ইমরুল কায়েস ইমরানকে তার বাড়ি থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে নিয়ে যায় অভিযুক্ত প্রধান আসামী আবুল কালাম। পরে কাশিনাথপুর থেকে তার সহযোগী বাকি চারজনকে তুলে নেয়। তারা সিএনজি কেনার কথা বলে ইমরানকে নগরবাড়ি এলাকার দিকে নিয়ে যায়। তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি ইমরানের। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি পরিবারের স্বজনরা। ১৬ জুলাই সকালে আমিনপুর থানার চরদুলাই চক কৃষ্ণপুর মুজিব বাঁধের পাশে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ইমরানের লাশ বলে সনাক্ত করেন স্বজনরা। এ সময় নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রাঘাতের চিহ্ন ছিল। পরিবারের ধারণা, তাকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ফেলে যায় অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় নিহত ইমরানের বাবা কালু সরদার বাদি হয়ে ১৬ জুলাই ৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৪। মামলার পর প্রধান আসামী আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি আদালতে ১৬৩৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। পরে মোকছেদ ও মোক্তার নামের আরো দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত শেষে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্তকারী কর্মকর্তা। দীর্ঘ শুনানী ও স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।