পাবনা: বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় হাসিনা সরকার কারাবন্দি করার পর মন ভেঙে যায় নেতাকর্মীদের। নিজের প্রিয় নেত্রীকে কারাবন্দি করার পর একইভাবে কষ্ট পান বিএনপি কর্মী মোজাম্মেল হকের। মনের দু:খে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যতদিন তার নেত্রী কারা ও মামলা মুক্ত না হবেন ততদিন নিজের মাথার চুল কাটবেন না। অবশেষ সাড়ে ৬ বছর পর খালেদা জিয়া মামলা থেকে অব্যাহতি ও কারা মুক্ত ঘোষণার পর নিজের প্রতিজ্ঞা ভেঙে মাথার চুল কাটলেন সেই মোজাম্মেল। বুধবার (০৭ আগস্ট) সেলুনে গিয়ে মাথার চুল কেটে নিজের প্রতিজ্ঞা পূরণ করেন তিনি। মোজাম্মেল হক (৫৩) পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামের মৃত ইন্তাজ আলী মোল্লার ছেলে। পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। আলাপকালে বিএনপি কর্মী মোজাম্মেল হক বলেন, ’বিএনপি দলকে আমি ভালবাসি। এক সময়ে আমি ছাত্রদলের কর্মী হয়ে রাজনীতি করেছি। এই দলটি আামর রক্তে মিশে আছে। দলের নেত্রীকে আমি মায়ের মত শ্রদ্ধা করি। সেই নেত্রীকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার যখন মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করলো তখন নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছিলাম না।’ তিনি বলেন, ‘ওই সময় প্রতিবাদ জানানোরও কোন ভাষা ছিল না আমার। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমার নেত্রী যতদিন কারামুক্ত ও মামলা থেকে অব্যাহতি না পাবেন, ততদিন আমি আমার মাথার চুল কাটবো না। অনেকেই বলতো মাথার চুল বড় রাখছি কেন। কিন্তু কাউকে বলতে পারিনি। অবশেষ আমার নেত্রী মুক্ত হয়েছেন। তাই বুধবার মাথার চুল কেটে আমি আমার প্রতিজ্ঞা ভেঙেছি।’ প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। তখন থেকে ছয় মাস অন্তর অন্তর আবেদন সাপেক্ষে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল আ.লীগ সরকার। মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) নির্বাহী আদেশে দণ্ডাদেশ মওকুফ করে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল্লা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়।