মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে সারাদেশের সাথে সমন্বয় করে ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ গণমিছিলে হামলা, ছাত্র হত্যা ও নয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় স্বৈরাচার সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এ সমাবেশ শুরু করেন তারা। এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রুয়েটের শিক্ষকরাও একাত্মতা পোষণ করে এ বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন। এসময় ‘এক দুই তিন চার, স্বৈরাচার তুই গদি ছাড়’, ‘শিবির ট্যাগের ছলচাতুরী, বুইজা গেছে জনগণ’, ‘দফা এক দাবি এক, স্বৈরাচারের পদত্যাগ’, ‘নয় ছয় বুঝিনা, কবে যাবি হাসিনা’, ‘আবু সাঈদ মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ এমন স্লোগান দিতে দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।
রুয়েট শিক্ষার্থী তানভির হাসান বলেন, সারাদেশের সাথে সমন্বয় করে আজকে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি। এখানে আমাদের একটাই দাবি স্বৈরাচার সরকার পদত্যাগ। সরকারের পদত্যাগ ছাড়া শিক্ষার্থী সমাজ আর ঘরে ফিরবে না। এ আন্দোলন আর কোটা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। পুলিশ প্রশাসন আমাদের ভাইদের উপর গুলিয়ে চালিয়েছে, তাদেরকে বলবো এখন সাবধান হোন। আপনাদেরও ছেলে-মেয়ে আছে, তাদের দিকে তাকান।
রাবি শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, আবু সাঈদের মতো জীবন দিতে আজকে মাঠে নেমেছি। হয়তো জীবন দিবো না হয়তো স্বৈরাচার সরকার পদত্যাগ করে মাঠ ছাড়বো। আমার ভাইগুলোর রক্তের দাগ বাংলার জমিনে এখনো শুকায়নি। কি দোষ ছিল তাদের। তারা সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকারের কথা বলেছিল। আজকে আমাদের আন্দোলনের দাবি একটা, স্বৈরাচার সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমরা তাদের সাথে যোগ দিয়েছি। আর কত ঘরে বসে আমার ছেলেদের রক্ত দেখবো। শিক্ষার্থীদের গায়ে গুলি করতে স্বৈরাচার সরকারের কি একটুও বুক কাঁপেনি? আজ থেকে এ আন্দোলনে গুলি চালালে সেই গুলি আগে শিক্ষকদের গায়ে লাগবে, তারপর আমাদের ছাত্রদের। শিক্ষার্থীদের আর কোন ভয় পাবার কারণ নেই তাদের পিতৃতুল্য শিক্ষকরা আজ থেকে তাদের সামনে থাকবেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি এবং তাদেরকে সুরক্ষা দিতে সবসময় তাদের সাথেই আমরা আছি। গণহত্যার দায় স্বীকার করে স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগ দাবী করেন এ অধ্যাপক।
এসময় হাজার হাজার শিক্ষার্থী এবং প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষক এ বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।