লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে তমিজমার্কেট এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় যুবলীগের এক কর্মীকে প্রকাশ্যেই অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে দেখা গেছে। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করা ব্যক্তি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাউদ্দিন টিপুর গাড়িচালক। দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অপর দিকে জেলার রামগঞ্জ উপজেলার রামগঞ্জ- হাজীগঞ্জ সড়কের পুলিশবক্সের সামনে শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে বৈষম্যবিরুধী আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলায় ১৫ জন আহত হয়। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানায়, শহরের চকবাজার জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সালাহ্ উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় তারা জয় বাংলা শ্লোগান দিতে থাকে। একই সাথে নামাজ শেষে সাধারণ মুসল্লীদের নিজ নিজ গন্তব্যে সরে যেতে আহ্বান করে। এসময় শহরের বিভিন্ন দোকান ও গলিমুখে আন্দোলনকারীদের বিক্ষিপ্ত অবস্থান নিতে দেখা গেছে। যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাদেরকেও সরে যেতে অনুরোধ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের অনুরোধে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরাও সরে গিয়ে তমিজ মার্কেট এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনে অবস্থান নেয়। এদিকে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মিছিল শেষেই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা বাজার ব্রিজ থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি চকবাজার মসজিদের সামনে গেলেই শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান শুরু করে। একপর্যায়ে মিছিলের পেছন দিক থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসার দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা মিছিলকারীদের ওপর হামলা চালান। এতে মানবজমিন পত্রিকার প্রতিনিধি মো. ইউসুফ, ছাত্র আন্দোলনকারীসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিক্ষার্থীরা জানায়, বিনা উসকানিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সাবেক সভাপতি সালাউদ্দিন টিপু ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে অন্তত ১০ জনকে আহত করে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় তারা। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক যুবলীগের সভাপতি এ কে এম সালাউদ্দিন টিপু বলেন, জামায়াত-শিবিরের নেতা–কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন নেতা–কর্মীকে মারধর করে। এ ছাড়া বাসাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে তারা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা স্বপন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারাই উসকানি দিয়ে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।