বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর মন্তব্য নিয়ে ‘বিতর্ক’ থামছেই না। ঢাকার আপত্তির পরে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে মুখ খোলে। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে পাল্টা জবাব দিলেন মমতা। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আমি অনেকের চেয়ে ভালো জানি।’ শুক্রবার (২৬ জুলাই) দিল্লিতে গেছেন মমতা। শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লিতে গেছেন তিনি। তার আগে শুক্রবার দিল্লির বঙ্গভবনে দলীয় সাংসদের সাথে বৈঠকও করেন মমতা। দিল্লিতে বাংলাদেশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আমি খুব ভালো জানি। আমি সাতবারের সাংসদ, দু’বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। পররাষ্ট্রনীতি অন্য কারো চেয়ে ভালো জানি। তাদের আমাকে শেখানো উচিত নয়। বরং তাদের পরিবর্তিত ব্যবস্থা থেকে শেখা উচিত।’
২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সহিংসতা প্রসঙ্গে মমতা জানিয়েছিলেন, ‘প্রতিবেশী (বাংলাদেশ) দেশ থেকে কেউ পশ্চিমবঙ্গের দরজায় এলে তিনি ফেরাবেন না।’ তবে সেইসাথেই তিনি জানান, এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে পারবেন না। কারণ, বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র দেশ। এ নিয়ে কিছু বলার থাকলে ভারত সরকার বলবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু মমতার এই মন্তব্য নিয়ে আপত্তি তুলে বিজেপি। তাদের দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার নেই। মমতার মন্তব্যে আপত্তি জানায় ঢাকাও। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, ‘মমতা ব্যানার্জীর প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, তার ওই বক্তব্যের জেরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।’ পাশাপাশি তিনি এ-ও জানান, এব্যাপারে ভারত সরকারকে ‘নোট’ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের কাছ থেকে পাওয়া ‘আপত্তিবার্তা’র কথা স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে, মমতাকেও কার্যত সংবিধানের পাঠ দিয়ে জানানো হয়েছে, অন্যকোনো দেশ বা বৈদেশিক বিষয় নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার কোনো রাজ্য সরকারের নেই। সংবিধান সেই অধিকার দেয়নি রাজ্যকে। এ নিয়ে বলার এখতিয়ার শুধু ভারত সরকারেরই আছে। সে প্রসঙ্গেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আক্রমণ করেন মমতা। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা