তৌহিদুল ইসলাম তালুকদার লায়নর,কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি ঃ
জয়পুরহাটের কালাইয়ে পুষ্টি ও ঔষধি গুণাগুণে ভরপুর সজিনার বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হয়েছে। সজিনার গাছগুলোতে এখন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে আবর কোন গাছে সজিনা গাছে ঝুরছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অনাবাদি ও পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতিয় সবজি সজিনার ফুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে গেছে। এর মধ্যে কোন কোন সজিনার গাছে গাছে ছোট ছোট সজিনা বের হচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সজিনা চাষ করে পুষ্টির পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন উপজেলার কৃষকরা। তবে, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার সজিনার বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার কৃষকরা।
সরেজমিনে ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই পৌরসভাসহ উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ওই ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে অকৃষি বা পতিত জমিতে বারোমাসি ও সিজনাল বা দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বারোমাসি সজিনার চাষ হচ্ছে ৬ হেক্টর এবং সিজনাল বা দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে ১৬ হেক্টর জমিতে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে, বাসাবাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে, স্কুল-কলেজ মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতিয় সবজি সজিনার সারি সারি গাছগুলোতে এখন ফুলের শোভা পাচ্ছে। আর ওই সব ফুলের মৌ মৌ গন্ধে এলাকায় ভরে গেছে। উপজেলাতে প্রতিবছরে সাজনা চাষ বেড়েই যাচ্ছে আর এখান কার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। তাছাড়া সজিনা বিক্রি করে অনেকেই অর্থিক ভাবে সচ্ছল হয়েছে। সজিনা চাষ ইতোমধ্যেই অর্থকরি ফসল হিসেবে সকলের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, প্রাকৃতির কোন দুর্যোগ না হলে এবার সজিনা বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার সজিনা চাষীরা।
উপজেলার মাত্রাই ইউনয়নে বিয়ালা গ্রামের সজনা চাষি হেলাল উদ্দিন বলেন, বাড়ীর সমনে রাস্তার ধারে প্রায় ১২টি সজিনার গাছ আছে। গতবছরে ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ১৩ মণ সজিনা পেয়েছি। আশা করছি, এবারও সজিনার বাম্পার ফলন পাব।
একই ইউনিয়রে বলিগ্রামের সুভাষ দত্ত বলেন, আমার ৮ শতক পতিত জমি আছে সেখানে তেমন কোন ফসল ফলেনা। সেখানে আমি বাণিজ্যিক ভাবে বারোমাসি ও সিজনাল বা দেশী জাতের সজিনা চাষ করেছি। গত বছর ঐসব সজিনাগাছ থেকে অনেক টাকার সজিনা বিক্রি করেছি। বর্তমান বাজারে সজিনার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পাইকারীরা আমাদের কাছ থেকে প্রতি কেজি সজিনা কিনছেন ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আর তার বাজারে প্রতি কেজি সজিনা বিক্রি করছেন ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। সজিনা বিক্রি করে অনেক লাভবান হচ্ছি।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব সবজি। এটি অনাবাদি ও পতিত জমিতে চাষ করা যায়। সজিনা চাষে পানির খরচ কম লাগে। এটি রোগ-বালাই নেই বললেই চলে এবং অন্যান্য খরচও তেমন নেই। সজিনায় সব ধরনের খনিজ পদার্থ রয়েছে। সজিনার পাতা, ফুল, ফল, বাকল ও শিকড় সবকিছুই ব্যবহার করা যায়। তবে, একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যাবে।