সরকার কোনো তোয়াক্কা না করে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে সমাবেশ ও মিছিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। ১০ দফা দাবি আদায় ও বিদ্যুৎতের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার কোনো নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে, দাম বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে, বিএনপির সরকারের সময় বিদ্যুতের ইউনিট ছিল ২ টাকা ৬০ পয়সা, আর এখন ১১ টাকা দিতে হয় এক ইউনিটে। তিনি বলেন, সরকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, ক্যাপাসিটি চার্জ নামে জনগণের পকেট কাটছে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছে, গত ১০ বছরে এদেশ থেকে ১০ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমেরিকা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের লোকদের পাচার করা টাকায় বাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। আজ রিজার্ভ সঙ্কট, ব্যাংকে তারল্য সঙ্কট। আজকে বাংলাদেশে ধনী-গরিবের ব্যবধান পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, যা গত ১২ বছরে সরকারের কারণে হয়েছে। আজকে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণি গরিব হয়ে গিয়েছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একদিকে জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন। অন্যদিকে সরকার বিরোধী দলকে লাগামহীনভাবে দমনের পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। এই সরকার অত্যাচারী, ফ্যাসিস্ট। এ সরকারের সময় আর বেশিদিন নেই। রক্ষা পাবে না। ৭২-এর সংবিধানের কথা বলেন, কী কারণে বাকশাল করেছিলেন? বলতে কী পারবেন? প্রশাসন আর সরকার যৌথভাবে লুটপাট করছে। আমাদের সাফ কথা, মহান মুক্তিযদ্ধ গিয়েছিলাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ডাকে। অনেক শহীদ হয়েছেন যুদ্ধে। আমরা বেঁচে আছি এই দেশ দেখার জন্য। বোনাস পেয়েছিলাম ৬০ বছর, হয়তো আর কয়েকদিন বাঁচব। না হয় বাঁচলাম না। মুক্তিযুদ্ধের মত আমার যুদ্ধ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার জন্য জ্জীবন দিলাম।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা অনেক সহ্য করেছে, আর বাঁচার উপায় নাই। এ সরকার টাকা পাচার করে মালয়শিয়াসহ অন্য দেশে বাড়ি করেছে। আর বাংলাদেশের মানুষ কষ্ট করবে তা হতে পারে না। এটা হতে দেয়া যায় না।
তিনি বলেন, এই সরকার সব অগণতান্ত্রিক কাজ করেছে। বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারী দল। বিএনপি আবার ধ্বংস স্তূপ গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবে ইনশআল্লাহ।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজ বাংলাদেশের মানুষের পকেট প্রতিমুহুর্তে কাটা হচ্ছে। এটা করছে ভোটচোর সরকার। তারা ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ৩০ হাজার কোটি টাকাতে নিয়ে গেছে। প্রতি নিয়ত তারা জনগণের পকেট চুরি করে যাচ্ছে। এ টাকা তারা বিদেশে পাচার করছে। এই লুটপাট আগামী দিনে চলতে দেয়া হবে না। এখন সব লুণ্ঠনের তথ্য ফাঁস হচ্ছে। কোনোভাবেই তারা রেহাই পাবে না। বাংলাদেশের মানুষ আজ আন্দোলনের মালিকানা হাতে তুলে নিয়েছে ।
সভাপতির বক্তব্যে আমান উল্লাহ আমান বলেন, দেশের প্রত্যেকটি মেগা প্রকল্পে মেগা দুর্নীতি করেছে সরকার। অনির্বাচিত আর অনৈতিক সরকার মনে করছে ১৪, ১৮ আর ২৩, ২৪ এক! আগের রাতে ভোট করে আর সরকার হতে পারবে না। জনগণ টা হতে দিবে না। এই অবৈধ সরকারে মাধ্যমে কোনো নির্বাচন হবে না। হতে দেয়া হবে না। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে যতোই মামলা দেন না কেন। কোনো লাভ হবে না। মামলা দিয়ে দমানো যাবে না।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চলনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েস্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেন প্রিন্স, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী।