রাতুল সরকার, রাজশাহী: রাজশাহীতে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। গত সপ্তাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়। মৃত ওই নারী গোদাগাড়ি উপজেলার মাটিকাটার বাসিন্দা। মারণঘাতি নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর পর থেকে রাজশাহীতে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর একটি টিম কাজ করছে। মৃত রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও স্যাম্পল সংগ্রহ করেছে তারা। এদিকে, নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর পর থেকে খেঁজুরের রস খাওয়াসহ বাদুড় ও পাখি খাওয়া অন্যান্য ফল না খাওয়ার বিষয়ে জোর তাগিদ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ওই নারীর কাঁচা খেঁজুরের রস খাওয়ার ইতিহাস ছিল।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক জানান, নিপা মারণঘাতি একটি ভাইরাস। এটি নিয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে। তবে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। আর নিপা আক্রান্ত হয়ে যেহেতু একজন মারা গেছে। এটির সংক্রমণের ঝুঁকি আছে। তাই খেঁজুরের রস খাওয়া যাবে না। আর যদি খেতেই হয়; তবে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করে তারপর খেতে হবে। এছাড়া পাখি খাওয়া ফল না খাওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত সপ্তাহেই হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। এই শীত মৌসুমে এটি একমাত্র রোগী। তবে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত কি না তা চিকিৎসার শুরু হওয়ার দিকে বোঝা যায় না। লক্ষণ প্রকাশ পেলে ডাক্তাররা স্যাম্পল ঢাকা আইইডিসিআরে পাঠায়। সেই রির্পোট আসতেও ৭ দিন সময় লাগে।
তিনি আরও বলেন, আইইডিসিআর এর একটি টিম রাজশাহীতে কাজ করছে। ওই রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ পেতে রস খাওয়ার পর আট থেকে ৯ দিন সময় লাগে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো ছয় থেকে ১১ দিন পরে দেখা যায়। আইইডিসিআর এর গবেষকদের মতে, খেঁজুরের রস গরম করার পর পান করা নিরাপদ। গুড়ও নিরাপদ। প্রতিষ্ঠানটি খেঁজুরের রস সংগ্রহকারীদের কাজ শেষে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শও দিয়েছে।