1. nobinbogra@gmail.com : Md. Nobirul Islam (Nobin) : Md. Nobirul Islam (Nobin)
  2. bd.momin95@gmail.com : sojibmomin :
  3. bd.momin00@gmail.com : Abdullah Momin : Abdullah Momin
  4. bd.momin@gmail.com : Uttarkon2 : Uttar kon
রাজশাহীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তুলা চাষ - Uttarkon
রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ভারতীয় দূতাবাসে আগামীকাল স্মারকলিপি দেবে বিএনপির ৩ সংগঠন দেশের প্রতিটি কোণে ন্যায়বিচার পৌঁছে দিতে হবে : প্রধান বিচারপতি ভারতের সাথে ‘নতজানু’ পররাষ্ট্রনীতি নয় : সাবেক সেনা সদস্যরা ভারতে ৩ মুসলমান শিশু-কিশোরকে বেধড়ক মারধর করে বলানো হলো ‘জয় শ্রীরাম’ আগামী বছর নির্বাচিত সরকার দেখব : ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান: বার্ণ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীনদের খোঁজ-খবর নিলেন তারেক রহমান আদমদীঘিতে মাদক ও নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলায় নারীসহ গ্রেপ্তার-৭ জহুরা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৮৩ জন নারী-পুরুষের মাঝে লেপ বিতরণ বগুড়ায় প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থা কার্যালয় পরিদর্শন বগুড়া আইন কলেজের অধ্যক্ষ এ্যাড. আল মাহমুূদ ইন্তেকাল: দাফন সম্পন্ন

রাজশাহীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তুলা চাষ

  • সম্পাদনার সময় : বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৯৮ বার প্রদশিত হয়েছে

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলায় তুলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে ব্যাপক ফলন দেখে বুঝাযাচ্ছে খরচের তুলনায় এবার কৃষকরা কয়েকগুণ বেশি লাভ পাবেন। কয়েক বছর ধরে কম খরচে বেশি লাভ পাওয়ায়, চারঘাটের স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে তুলা চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। জলবায়ু সহনশীল এ তুলা চাষে বেশি লাভ পাওয়ায় উপজেলার বড় ও মাঝারি শ্রেণীর কৃষকরা তুলা চাষের প্রতি ঝুঁকছেন। তুলার যেন নেই কোনো তুলনা, বর্তমানে তুলা কৃষকদের কাছে সাদা সোনায় পরিণত হয়েছে। চারঘাট তুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন উপজেলার চারঘাট, ভায়ালক্ষীপুর নিমপাড়া ও সরদহ ইউনিয়নের চাষিরা। তুলা চাষে সংসারে সচ্ছলতা আসায় অন্য ইউনিয়নের চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন। অনুর্বর জমিতে কম পুঁজিতে নামেমাত্র শ্রম ও সরকারি সহযোগিতা পাওয়ায় উপজেলায় তুলা চাষের পরিমাণ ও চাষির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাদের উৎপাদিত তুলা সরাসরি তুলা উন্নয়ন বোর্ড ন্যায্য দামে কিনে নেয়। ফলে কৃষকরা অন্য ফসলের তুলনায় তুলাতে অধিক লাভবান হচ্ছেন।
চারঘাট উপজেলায় সরকারি সহযোগিতায় ২০১৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে উন্নত জাতের তুলা চাষ শুরু করা হয়। প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে সরকারি সহায়তায় কৃষকরা সিবি-১২ এবং হাইব্রিড প্রজাতির রুপালি-১ জাতের তুলার চাষ করছিলেন। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বেড়ে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেতে এসিট, জেসিট, আমেরিকান বোলওয়ার্ম, স্পটেট বোলওয়ার্ম ও আঁচা পোকার অক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এতে তুলা চাষি কীটনাশকের বদলে ফেরোম্যান ফাঁদ ও পার্চিং পদ্ধতিতে বেশ উপকার পেয়েছেন।
চারঘাট তুলা উন্নয়ন বোর্ড (পিএসসিপি) অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর চারঘাট উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে তুলার চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রদর্শনী ও কৃষকের নিজ অর্থায়নে চাষ করা হয়েছে। ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় আগামীতে চাষির সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে আশা করছেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় কৃষকরা। তুলা চাষিরা জানান, রূপালি-১, হোয়াইট গোল্ড-১ ও হোয়াইট গোল্ড-২ জাতের তুলা প্রতি বিঘাতে বীজসহ উৎপাদন হয় ১৬ মণ থেকে ১৮ মণ করে। যার বর্তমান বাজার মূল্য কমপক্ষে ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা। এমন অনুর্বর জমিতে অন্য কোনো ফসলে এই লাভ পাওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। আবার একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করেও বাড়তি আয় করা যায় বলে চাষিরা জানান।
এবার সফল তুলা চাষিদের মধ্যে উপজেলার ৩নং সরদহ ইউনিয়ানের পাটিয়াকান্দির গ্রামের মোঃ জানামুল মন্ডল একজন। তার ভাগনা ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন শিমুলিয়া গ্রামের সবুজ হাসান কয়েক বছর ধরে তুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। সে এবং উপজেলার তুলা কর্মকর্তারা তাকে তুলা চাষের পরামর্শ দেন। তিনি এ বছর প্রায় ৩ একর জমি তুলা চাষ করেছেন। প্রথমবার তুলা চাষে সফল হয়েছেন ও উপজেলায় সর্বোচ্চ ফলন আশা করছেন তিনি। জানামুল মন্ডলসহ অনেকেই বলেন, তুলা চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ালে অনেক অনুর্বর, নিস্ফলা বা অনাবাদি জমিতে তুলা চাষ করে অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। চাষিদের মতে, নিস্ফলা জমিতে তুলা চাষ করায় একদিকে যেমন জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে কৃষকরা বেশ টাকা পাচ্ছেন, তাদের পরিবারে আসছে স্বচ্ছলতা। তাই অনেকে ধান ও গমসহ বিভিন্ন চাষ ছেড়ে তুলা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
চারঘাট তুলা উন্নয়ন বোর্ড (পিএসসিপি) এর কর্মকর্তা মোঃ মারুফ সরদার জানান, এ দেশে আমেরিকান, ইজিপসিয়ান, ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানি জাতের তুলা চাষ হলেও চারঘাটে রুপালি-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২ জাতের তুলা বেশি চাষ করা হয়েছে। এছাড়া ডিএম-৪, সিডিবি ও সিবি-১২ জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, তুলা গ্রীষ্মকালীন ফসল। মে মাসের শেষ ভাগ থেকে শুরু করে জুনের প্রথমার্ধ পর্যন্ত জমিতে তুলা বীজ বপন করতে হয়। তুলার ভালো ফলনের জন্য গড়ে ২৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাত ৬৩৫ থেকে ১০১৬ মিলিমিটার হওয়া উত্তম। ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার গভীরতায় চাষ করে হেক্টরপ্রতি ২৭৭ কেজি অস্থিচূর্ণ, ৯.৫ টন থেকে ১৩.৮ টন গোবর বা সবুজ সারসহ পরিমিত পরিমাণে ইউরিয়া, টিএসপি, এমপি সার ব্যবহার করলে ফলন ভালো হয়। আর জাত ভেদে বীজ বুনতে হয় ৭.৫ থেকে ১৮ কেজি। বীজ বপনের ৬ মাস পর তুলা সংগ্রহ করা যায়। চারঘাট উপজেলার সব ইউনিয়নে তুলা চাষ করা সম্ভব। প্রত্যন্ত অঞ্চলে তুলা চাষ ছড়িয়ে দিতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ও বিভিন্ন প্রকল্প কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বলে মারুফ সরদার জানান।
মোজাদ্দীদ আল শামীম প্রধান তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো কৃষিনির্ভর। এদেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও এখনো বিভিন্ন শস্য ও ফসল আমদানি নির্ভরতা কমেনি। এমন একটি কৃষি ফসল তুলা। কিন্তু তুলা উৎপাদনে আমরা পিছিয়ে আছি। তুলা একটি আন্তর্জাতিক মানের শিল্প ফসল, যা বিশ্বব্যাপী “সাদা সোনা” হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৮০ লাখ বেল তুলার চাহিদা রয়েছে, কিন্তু চাহিদার প্রায় ৫ শতাংশ দেশে উৎপাদন হচ্ছে। আর পোশাক খাতে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ তুলা বিদেশ থেকে এখনও আমদানি করতে হয়। চাষ থেকে তুলার আঁশ ছাড়াও ভোজ্যতেল, খইল, জ্বালানি উপজাত হিসেবে পাওয়া যায়। এ ভোজ্যতেলে খুব কম পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে এবং তুলার বীজ থেকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে তেল পাওয়া যায়; যা উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ এবং সয়াবিন তেলের চেয়েও পুষ্টিকর। আর তুলার খইলে ২৪ শতাংশ উচ্চ প্রোটিন পাওয়া যায়, ২০ শতাংশ হারে উচ্চফ্যাট ও ৪০ শতাংশ ক্রুড আঁশ; যা পশু ও মৎস্যখাদ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এবং সর্বোচ্চ ভালো ফসল কড়াই কৃষক জানামুল মন্ডলকে এই বছরে সেরা কৃষক ও পুরস্কৃত করার আশ্বাস দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরও খবর
Copyright &copy 2022 The Daily Uttar Kon. All Rights Reserved.
Powered By Konvex Technologies