নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : ডিমলায় সরিষার ক্ষেতগুলো হলুদ ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এ মৌসুমে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। আমন ধান চাষের পর কৃষকরা ওই জমিতে সরিষা চাষ করেন। বিশেষ করে চরের কৃষকরা অগ্রীম সরিষা আবাদ করেন। যে কারণে অন্য এলাকার চেয়ে এখানে পুরোদমে সরিষা গাছে ফুল ফুটেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালাপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ডালের চেয়ে সরিষা চাষে বেশি লাভ হওয়ায় সরিষার প্রতি উৎসাহী হয়েছেন কৃষকরা। গতবারের ভালো ফলনে এবার বেড়েছে সরিষার চাষ। এবারও সরিষার ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা। ফলে চাষিদের মুখে হাসি লক্ষ্য করা গেছে। বালাপাড়া ইউনিয়নের কৃষক আলমগীর হোসেন ও খোরশেদ জানান, প্রতি বিঘা (৩০ শতাংশ) জমিতে সরিষা উৎপন্ন হয় কমপক্ষে ৬-৮ মণ। হালচাষের পর বীজ বপন, সার ও সেচ দিতে হয়। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় গড়ে ১ হাজার টাকা। কম হলেও প্রতি মণ সরিষা বিক্রি হয় ৩-৪ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ বাদে প্রতি বিঘা জমিতে ৮-৯ হাজার টাকার বেশি লাভ করা সম্ভব। কিন্তু সমপরিমাণ জমিতে ধান হয় গড়ে ১৫-২০ মণ। ধান চাষে খরচ বেশি। সে হিসেবে সরিষা চাষে লাভ বেশি। তাই এলাকার কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুঁকেছেন। টেপা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক হুকুম আলী, বাচ্চু মিয়া বলেন ‘গতবারের মতো এবারও চর এলাকাজুড়ে আগাম সরিষা আবাদ হয়েছে। সরিষা ক্ষেতগুলো হলুদ রঙের ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে সরিষা আবাদ হচ্ছে গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। জমির পরিমাণ প্রায় ৪ বিঘা। সরিষা চাষে ঝুঁকি ও খাটুনি কম। তবে লাভ বেশি। এ জন্য তিনি সরিষা চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। তিনি সরিষা চাষ থেকে ২০-৩০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন। পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের কৃষক জালাল উদ্দিন,আবুল হোসেন বলেন একসময় এলাকায় মুসুরি, মুগসহ বিভিন্ন জাতের ডাল চাষ হলেও এখন তেমন হয় না। সরিষা চাষে লাভবান হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী জানান গত বছরের তুলনায় উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৯৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর উপজেলার ৮২০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। সেই হিসেবে চলতি মৌসুমে এবার সরিষার আবাদ বেড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বাম্পার ফলন হবে।’