রাতুল সরকার, রাজশাহী: দীর্ঘ ৯ বছর ধরে পুলিশে চাকরি করছেন মানিক আলী। পাশাপাশি রাজশাহীর বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ অপারেটরও তিনি। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ী ইউনিয়নে বিএমডিএর ২০২০-২১ অর্থবছরের গভীর নলকূপের অপারেটরের নবায়নযোগ্য তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছে মানিক আলীর নাম। চুক্তিপত্র সূত্রে জানা যায়, পাকড়ী ইউনিয়নের নারায়ণপুর-২ এর গভীর নলকূপের অপারেটর কুরবার আলীর ছেলে মানিক আলী। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মানিক আলী একজন পুলিশ সদস্য। ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি কনস্টেবল হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদেন তিনি। যার আইডি নম্বর ৮৬০। প্রশিক্ষণ শেষে প্রথমে ঢাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন, এরপর রাজশাহী জেলা পুলিশে যোগ দেন। বর্তমানে নওগাঁ জেলায় গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) কর্মরত মানিক আলী।
এরআগে ২০০৯ সালে বিএমডিএর গভীর নলকূপের অপারেটর হিসেবে যোগদান করেন মানিক আলী। এরপর পুলিশে চাকরি পেলেও অপারেটর পদটি তিনি বাদ দেননি। তিনি নিজে উপস্থিত না থেকে শরিফ আলী নামের একজনকে দিয়ে নলকূপ অপারেটরের কাজ করান। এখন এটি শরিফ আলীই দেখাশোনা করেন।
এ বিষয়ে জানতে শরীফ আলীর সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ওই নলকূপের অপারেটর বলে স্বীকার করেন।
কিন্তু কাগজ-কলমে তো এই নলকূপের অপারেটর মানিক আলী। আপনি কীভাবে কাজ করছেন, এমন প্রশ্ন করলে তিনি সংযোগ কেটে দেন। এরপর তাকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর সংযোগ কেটে দেন পুলিশ সদস্য মানিক আলী।
এ বিষয়ে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান, বেশকিছু জায়গায় অপারেটরদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। কোথাও কোথাও অপারেটররা কৃষকদের কাছে বেশি দামে পানি বিক্রি করে থাকেন। চাষিদের কাছ থেকে উৎকোচও নেন। কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিএমডিএতে প্রায় ১৬ হাজার নলকূপ অপারেটর রয়েছেন। কিন্ত জনবল স্বল্পতায় সব জায়গায় মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে না।
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন বলেন, কোনো পুলিশ সদস্য কর্মরত অবস্থায় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবেন না। এটি পুরোপুরি পুলিশ প্রবিধান লঙ্ঘন। কারও বিরুদ্ধে এ ধরনের সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।