রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন আবারো নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন জামিন আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।
আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, এ মামলার এফআইআরে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম নেই। যাদের নাম আছে তাদের জামিন হওয়ার পরও মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করেছেন একই আদালত। এতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, সরকার আদালতের ওপর প্রভাব খাটাচ্ছে। এ কারণে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর হয়েছে।
আদালতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদনের শুনানির সময় আইনজীবী হারুন আর রশিদ, ওমর ফারুক ফারুকী, জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, জিয়াউদ্দিন জিয়া, মো: আক্তারুজ্জামান, মো: সগীর হোসেন লিওন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আবদুল খালেক মিলনসহ শতাধিক বিএনপি সমর্থক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রেজাউল করিমের আদালতে জামিন আবেদন করেন মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের আইনজীবীরা। আদালত শুনানির জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
গত ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে তাদের নিজ নিজ বাসভবন থেকে তুলে নেয়ার প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর ডিবির কার্যালয় থেকে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয়। গত ১০ ডিসেম্বর বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন ডিবির পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম। অন্যদিকে তাদের আইনজীবীরা বিএনপির এই শীর্ষ দুই নেতাকে জামিন দেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জামিন নামঞ্জুরের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার দেখানো হয়। একই মামলায় গত ৮ ডিসেম্বর দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীসহ ৪৩৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
কারাগারে পাঠানো বিএনপি নেতাদের মধ্যে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ ৪৩৪ জন। তবে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।