পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে একই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষকদের সকাল দশটার মধ্যে কলেজে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে হয়। মঙ্গলবার সকাল সোয়া দশটার দিকে ওই কলেজের বাংলা বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক রহমত উল্লাহ অধ্যক্ষের কক্ষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে যান। এরই মধ্যে অধ্যক্ষ ওই শিক্ষককে দেরিতে আসার জন্য খাতায় অনুপস্থিত দেখান।
এ সময় রহমত উল্লাহ অধ্যক্ষকে বলেন, বাড়িতে সমস্যা ছিল আর সড়কে যানজটও ছিল। আমার নৈমিত্তিক ছুটি পাওনা আছে, আমি ছুটির দরখাস্ত দিতে চাই। না হলে আজকের জন্য খাতায় স্বাক্ষর করতে দেন। একথা শোনার পর অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
শিক্ষক রহমত উল্লাহ একপর্যায়ে অধ্যক্ষকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তিনি আরও উত্তেজিত হয়ে যান। পরে অধ্যক্ষ উত্তেজিত হয়ে রহমত উল্লাহকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এতে মাটিতে পড়ে গেলে তাকে লাথিও মারেন। একপর্যায়ে পাশের কক্ষ থেকে তিনজন শিক্ষক ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন।
ভুক্তভোগী সহকারী অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বলেন, অধ্যক্ষ মাঝেমাঝেই শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর আগে গত ১২ জুন এবং ২০১৭ সালেও আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। দেরিতে আসার জন্য অনুপস্থিত না করে ছুটির দরখাস্ত দিতে চেয়েছিলাম। এটাই আমার অপরাধ। অশালীন ভাষাই শুধু নয়, উনি আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত করেছেন। অধ্যক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় আমিসহ অন্য শিক্ষকরা তার অন্যায় আচরণের বিচার পান না।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ রবিউল আলম বলেন, গত সোমবার তিনি দেরী করে কলেজে আসছেন। মঙ্গলবারও দেরী করেছেন। তার কাছে জানতে চেয়েছি দেরী করে কেন আসেন। তিনিই বরং উত্তেজিত হয়ে উঠেন। আমি কি প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে তার কাছে জানতে চাইতে পারি না বলেন। আর মারধর করার অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষক অনিয়ম করলে চাকরিবিধি অনুযায়ী অধ্যক্ষ ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু শিক্ষককে মারধর করা ভীষণ অন্যায়। এই অন্যায়ের জন্য অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমি এখনো জানি না। খোঁজখবর নিয়ে দেখবো।