রাজশাহী: রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মোঃ তানজির রহমান বন্ধন (৩২) নামের এক সহকারী প্রকৌশলীকে ব্যপক মারপিট করে আহত করেছে নুরে ইসলাম মিলন ও তার সহযোগীরা। এ সময় তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারে ব্যপক ভাংচুর চালিয়েছে তারা।
আহত মোঃ তানজির রহমান বন্ধন মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার দোসর মন্ডলের মোড় এলাকার মোঃ খাইরুল আলমের ছেলে। তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত ৪টার দিকে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধিন দোসরমন্ডলের মোড়ে তাকে পথরোধ করে মারধর মারপিটের সময় প্রাইভেটকারে ভাংচুর চালায় তারা। এ সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তার পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি রামেকের ৩১নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রকৌশলী মোঃ তানজির রহমান বন্ধন জানান, তার স্ত্রী পেশায় একজন ডাক্তার। স্ত্রী ঢাকায় যাবেন। তার জন্য শিরোইল রেলষ্টেশনে টিকিট আনতে যাচ্ছিলেন তিনি। হাটাৎ দোসর মন্ডলের মোড়ে ৪টি মোটরসাইকেল নিয়ে মিলন তাকে ঘিরে ফেলে। এ সময় তারা প্রকৌশলীর প্রাইভেটকার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে মিলনের ছেলে শুভ, হানিফ, রনক, মিশাল, মারুফ, মোজাম্মেল হক বাবু (সাবেক বিডিআর) তাকে মারপিট করে আহত করে এবং প্রাইভেটকার ভাংচুর করে।
তিনি আরও জানান, তাদের সাথে আমার কোন শত্রুতা নাই। তবে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই তাকে তারা মারধর করেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে থানায় মামলা করবেন বলেও জানান এই প্রকৌশলী।
এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ৩টা ৫মিনিটে হানিফ চোধুরী তার নিজ নামীয় ফেসবুক থেকে লাইভ করে। সেখানে মিলনের ছেলে শুভ, হানিফ, রনক অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করেতে দেখা যায়। বিশেষ করে তারা পুলক, কাঁচু, তমাল দাস ও রাতুল সরকারের নাম ধরে গালি দেয়। যা উচ্চারণ করার মতো নয়।
একই দিন রাত ৭টা ২৫ মিনিটে সাংবাদিক এহেসান হাবিব তারাকে বোয়ালিয়া থানায় গেইটে মারপিট করে নুরে ইসলাম মিলন ও তার সহযোগীরা। পরে তারা সেখান থেকে চলে গেলে আবার দ্বিতৃয় দফায় হামলা করে মারপিট করে আহত করে আহত করে সাংবাদিক তারাকে। সোমবার রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সহকর্মীরা তাকে রামেকে ভর্তি করে। সেখানে সে ৩১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধিন রয়েছে।
বোরবার মিলনের দুই সহযোগী সুরুজ ও বিডিআর বাবু রাজশাহী কোর্টে গিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে গালি গালাজ করে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নূরে ইসলাম মিলন একধিক প্রতারণা ও মাদক মামলার আসামী। মহানগরীতে তার নিজস্ব একটি চক্র রয়েছে। তার কাজ হলো মাদক সেবন, ব্ল্যকমেইল, ছিনতাই, মাদক কারবার। তারা রাতভর মোটরসাইকেল দিয়ে শহর জুড়ে দাপিয়ে বেড়ায়। তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে যাদের কলম চলে বা প্রতিবাদ করে তাদের টার্গেট করে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। মারধর করে।
সম্প্রতি তারা রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ভোরের কাগজের সাংবাদিক মোঃ সাইদুর রহমানকে নিয়ে নাস্তিক বলে লিফলেট বিলি করে।
উল্লেখ্য, মোঃ সাইদুর রহমানের পিতা: মৃত আতাউর রহমান (সাবেক রাজশাহী জেলা গভার্ণর এবং বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর ছিলেন), তারা মা মৃত বেগম মনোয়ারা রহমান, তিনি একজন ভাষাসৈনিক ছিলেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রা:বি) প্রতিষ্ঠাতা সাইদুর রহমানের আপন নানা মাদার বখস্। রাবি ছাড়াও তিনি ১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ঐতিহ্যবাহি প্রেসক্লাব রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান। কর্ম, ব্যবসা এবং জাতীয় দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকায় রাজশাহী স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে ৩০ বছর যাবত কর্মরত আছেন।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে আরএমপির মুখপাত্র উপ-পুলিশ কমিশার (সদর) বলেন, সার্বিক বিষয় নিয়ে সামনাসামনি কথা বলবো। অফিসে আসেন।