আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার মাঠে মাঠে আমন ধান খেতে খোলপচাসহ নানা রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। দানাদার ও তরল ঔষধ ব্যবহার করেও রোগ সারাতে ব্যর্থ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রোগাক্রান্ত ওই সব জমির কৃষকরা। এব্যাপারে কৃষকরা মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের তেমন একটা সহায়তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ মিলেছে। গ্রাম গঞ্জের খুচরা সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ীরাও কৃষকদের সাথে সহমত পোষন করেন।
সরেজমিন উপজেলার কয়েকটি মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, আমন ধানের ক্ষেতের জমিতে আক্রমন করেছে খোলপচা (কৃষকদের ভাষায় পচামিনা) রোগ। এছাড়া পাতা মোড়ানো ও মাজরা পোকার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ত্রিমুখী রোগ-বালাই ও পোকার আক্রমনে ক্ষেতের জমির জায়গায় জায়গায় ধান গাছ পচে গেছে। কোন কোন জমির ধান গাছ ধারণ করেছে হলুদ ও সাদা বর্ণ। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সান্তাহার ইউনিয়ন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুল আহসান কাঞ্চন কৃষকদের ঢালাও অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং আমন ক্ষেতের রোগ-বালাই ও পোকার আক্রমন সম্পর্কে বলেন, অধিকাংশ কৃষক কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে সময় মত যোগাযোগ করেন না বলে দাবী করে। তিনি আরো বলেন, অসচেতন কৃষকরা কীটনাশক ব্যবসায়ীরা যা বলে অথবা নিজে যা মনে করেন সে সব ঔষধ প্রয়োগ করে থাকেন। ফলে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সুফল পায় না কৃষকরা। আসলে আক্রান্ত রোগ-বালাই ও পোকা দমনে কখন কোন ঔষধ কি পরিমান ব্যবহার করতে সে পরামর্শ নেয়ার জন্য অধিকাংশ কৃষক কৃষি বিভাগের সাথে যোগাযোগ করার জন্য মাঠ পর্যায়ে ফোন নম্বর দেওয়া আছে। কিন্তু সময় মত তারা কেউই যোগাযোগ করেন না। এছাড়া কৃষকরা কৃষি বিভাগের নিশেধাজ্ঞা অমান্য করে বেশী ফলন হওয়া ও সময় কম লাগার অজুহাত দিয়ে সরকারের অনুমোদনহীন জাত স্বর্ণা, স্বর্ণা-৫, সুমন স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা, মামুন স্বর্ণা ও রনজিৎ স্বর্ণাসহ নানা জাতের ধান আমন মৌসুমে বেশী চাষ করেন। ফলে রোগ-বালাই ও পোকার আক্রমন হয় বেশী। তবে আমরা সচেতন আছি। কোন কৃষক ফোন দেওয়ার সাথে সাথে ছুটে গিয়ে জমি পরিদর্শন করার পর কৃষকদের সাধ্যমত সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারীর সাথে মঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, উপজেলার যে কোন প্রান্ত থেকে কৃষকরা আমাদের কাছে ফোন দেওয়ার সাথে সাথে ছুটে গিয়ে জমি পরিদর্শন ও কৃষকদের সাধ্যমত সঠিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরোও বলেন, কৃষকদের যে কোন ধরনের সমস্যা হলে প্রতিটি ব্লকের মাধ্যমে এলাকায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ফোন নাম্বার দেয়া আছে। কৃষকরা আমাদের সাথে নির্বিঘেœ কথা বলতে পারেন।