‘আওয়ামী লীগের কোনো সমর্থন নেই কারণ ওরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে’ মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ওদের রাজনীতি আজকে সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে চলে গেছে। সেই কারণে তারা বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার সাহস হারিয়ে ফেলেছে।
তিনি বলেন, ‘কাকে দিয়ে মোকাবেলা করাচ্ছে- ওই দখলবাজ, ওই টেন্ডারবাজ, ওই লুটপাটকারী, যারা আওয়ামী লীগের রাজত্বে পকেট ভর্তি করেছে, তারাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের একমাত্র সমর্থক। এছাড়া তাদের কোনো সমর্থ নেই। তারা বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে পারবে না, করবে না। করতে হলে এদেরকে দিয়ে মোকাবেলা করবে।’
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর গাউসুল আজম জামে মসজিদ সংলগ্ন ময়দানে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তরের গুলশান জোনের উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু বলেন, ‘পুলিশের একটি অংশ আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে গেছে বা নেতা হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা এই পথে যাওয়ার চেষ্টা করবে। আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি, আপনারা এই পথে যাইয়েন না। এটা আপনাদের জন্য ভালো হবে না, বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাস্তা থেকে কেউ ফিরে যাবে না। আমরা কেউ ফিরে যাব না, আমরা সবাই রাস্তায় থাকবো, তাদেরকে পরাজিত করবো।’
তিনি বলেন, ‘এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে রাস্তায় থাকতে হবে। তাবিদ আউয়ালের হাত ভেঙ্গেছে, মাথা ফাটিয়েছে কিন্তু সে যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে এসেছে। ও তো ঘরে বসে থাকতে পারতো কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে এসেছে। আমাদের সকলকে এইভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে রাস্তায় থাকতে হবে। বাংলাদেশের কোনো শক্তি নাই, এর প্রতিরোধ করতে পারবে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশের যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথে। ফয়সালা প্রায় হয়ে গেছে। ফয়সালা হয়ে গেছে, এটাকে ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ রায় দিয়েছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে যে তাদের কর্মকান্ড তার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, বাকস্বাধীনতা হরণের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, দেশের মানুষের নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, হত্যার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। আমাদের যে তিনজনকে হত্যা করেছে, তারা হবে আগামী দিনের বীর।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এ আন্দোলন শুধু বিএনপির একার নয়, আমাদের এ আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন অন্যান্য রাজনৈতিক দল সুধী সমাজ যারা এই আন্দোলনের শামিল হয়েছে তাদেরও আন্দোলন। এজন্য আগামী দিনে এই আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। বিজয় হওয়ার পরে যে জাতীয় সরকারের ঘোষণা দিয়েছে তার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মেহনতের কাজ করব। শুধু এই ফ্যাসিস্টকে সরাবো না, এরপর আগামী দিনের বাংলাদেশ কি হবে তার রূপরেখা আমরা সবার সামনে তুলে ধরব।’
বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির নেতা আবদুস সালাম, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কামরুজ্জামান রতন, সরাফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সুলতানা আহমেদ, তাবিথ আউয়াল, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।