হঠাৎ করে বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরম সুরে কথা বলছেন, চায়ের দাওয়াত দিচ্ছেন, এসব স্বাভাবিক বিষয় না, এর ভেতর নতুন ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার (২৫ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে এলে বিএনপিকে চা খাওয়াব’ শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, আপনার চায়ের দাওয়াত, সেই চায়ের মধ্যে কি থাকবে এটা জনগণের মধ্যে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শেখ হাসিনার সেই চায়ের দাওয়াতে মানুষের প্রশ্ন। বিরোধী দলকে ডেকে তিনি কি খাওয়াবেন? এর মধ্যে কি দেবেন? ধুতুরার ফুল থাকবে নাকি হ্যামলোকের রস থাকবে। এটা মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ঘেরাও কর্মসূচি করলে চায়ের দাওয়াত দেব; হঠাৎ আপনার গলার সুর এত নরম হলো কেন? এটাতো অদ্ভুত ব্যাপার। আপনার গলার সুর যখন ক্ষীণ হয় তখন বুঝতে হয় বিরোধীদলের ওপর মনে হয় আরও কিছু ভয়ংকর নির্যাতন নেমে আসছে। রিজভী বলেন, আপনি এর আগেও বলেছেন বিএনপিকে আপনারা মামলার কাগজগুলো পাঠান। তখন আমরা দেখেছি আরও ব্যাপকভাবে মামলা দিয়েছেন। বিএনপির যেই নেতা মারা গেছেন সেই লাশের নামে, যিনি হজ করতে গেছেন তার নামে, জেনে হাসপাতালে চিকিৎসারত আছেন তার নামে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আপনি লুটপাট করছেন। আপনার রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি জনগণের টাকা। আপনার কোনো মায়া-মমতা নেই প্রধানমন্ত্রী। আপনার সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে বলাচ্ছেন যে দেশে কোনো সংকট নেই। রিজভী বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার কি এটা জানার জন্য দেশের জনগণের কোনো ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রি নেওয়ার দরকার নেই, কোনো ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার দরকার নেই। ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনারা যে দৃষ্টান্ত দিয়েছেন এই দৃষ্টান্তই হচ্ছে বিরাট শিক্ষা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি বলে দেন। ‘১৯৯৫-৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের জন্য আমরা আওয়ামী লীগ যা করেছি। এ দৃষ্টান্তের আমরা আগুন লাগাবো না মানুষ মারবো না কিন্তু আন্দোলন করে কিভাবে দাবি আদায় করতে হয় গণতন্ত্রের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে জনগণের স্বাধীনতার পক্ষে সেটা আমরা প্রতিষ্ঠা করব। রিজভী বলেন, কাদের সাহেবরা প্রায়ই বলে থাকেন এটা সংবিধানে নেই। ৯৫-৯৬ সালে এটা সংবিধানের আসলো কি করে। এটার দৃষ্টান্ত তো আপনারাই দেখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলব তিনি বলছেন সংকট নেই। কিন্তু সংকট হলে এর যে পরিণতি হবে; প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলি আপনার সাধারণ সম্পাদকরা তখন কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে। সেই শিক্ষাটাও এর আগে আমরা পেয়েছি। আপনি কোথা থেকে চাঁদা নিয়েছেন সেটা ওবায়দুল কাদের, শেখ সেলিম সব বলে দিয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এমপি মন্ত্রীরা বলছেন এটা সংবিধানে নেই, দেওয়া যাবে না। কি করে দেওয়া যাবে সেটা আপনাদের কাছ থেকে আমরা শিখেছি। প্রধানমন্ত্রী আপনি সাবধান থাকবেন। এই সংকটের পরিণতিতে আপনার আশপাশের লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে। কারা মেগা প্রজেক্টের টাকা বিদেশে প্রচার করেছে, কারা ব্যাংকের টাকা লোপাট করেছে, উচ্চমূল্যে সুদে ঋণ নিয়ে যে পদ্মা সেতু তৈরি করেছেন। এটা করতে গিয়ে জনগণের যে টাকা হরিলুট হয়েছে এটা জনগণ জানতে চাইবেই। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, তাঁতি দল নেতা কাজী মনিরুজ্জামান ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম।