1. nobinbogra@gmail.com : Md. Nobirul Islam (Nobin) : Md. Nobirul Islam (Nobin)
  2. bd.momin95@gmail.com : sojibmomin :
  3. bd.momin00@gmail.com : Abdullah Momin : Abdullah Momin
  4. bd.momin@gmail.com : Uttarkon2 : Uttar kon
উত্তরবঙ্গে এক মাসের ব্যবধানে বন্যার পর খরা - Uttarkon
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
তরুণ প্রজন্মকে সঠিকভাবে গড়ে তোলা গেলে আগামীর বাংলাদেশের চিত্র পাল্টে যাবে-মির্জা ফখরুল ইসলাম  দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত জামায়াত থামবে না : শফিকুর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের সবচেয়ে বেশি অপমানিত করেছে আওয়ামী লীগ : রিজভী জাঁকজমকপূর্ণ অভিষেকে সোমবার ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন দুপচাঁচিয়ায় আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন দুপচাঁচিয়া ইয়ুথ ক্লাবের পক্ষ থেকে গরীব ও দুঃস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ রাজশাহীর বানেশ্বরে হাটে পেঁয়াজ চারা থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ বক আর বুনোহাঁস শিকার করে খাওয়া সেই ভøগার আল-আমিন ও তুলিকে খুঁজছে বন বিভাগ মতিহারে চোরাই মালামাল-সহ চোরচক্রের চার সদস্য গ্রেফতার

উত্তরবঙ্গে এক মাসের ব্যবধানে বন্যার পর খরা

  • সম্পাদনার সময় : শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২
  • ৯১ বার প্রদশিত হয়েছে

দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বন্যা থেকে খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড় জেলায় পরিস্থিতি সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বর্ষা মৌসুমের এই সময়ে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তার থেকে ৬০ শতাংশ কম। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে দিনাজপুরে ৯ মিলিমিটার, তেঁতুলিয়াতে ১৮ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে এটি এই মৌসুমি যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা তার চেয়ে অনেক কম হচ্ছে এবং এটি পর্যাপ্ত নয় বলেও জানানো হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এ মাসে আরো ৬০ শতাংশ বৃষ্টিপাত হলে সেটি স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে ধরা হবে।

খরা কী?
দিনাজপুর অঞ্চলের কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার গুহ বলেন, ফসল ফলানোর জন্য মাটিতে যে পরিমাণ পানির উপস্থিতি থাকার কথা, যখন সেই পরিমাণ উপস্থিতি থাকে না তখন সেটাকে খরা বলা হয়। অর্থাৎ ফসলের যে পরিমাণ পানি দরকার সেটি সে পাচ্ছে না। তিনি বলেন, এখন সে অবস্থাই বিরাজ করছে। ‘সুতরাং এটাকেই আমরা খরা বলবো।’ প্রাকৃতিক বা সেচ না দেয়া- এই দুই কারণেই খরা হতে পারে। এদিকে, রংপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, এ মৌসুমে ১৫ দিন বৃষ্টি না হলে তাকে খরা বলা হয়। সেখানে শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ২৩ দিন ধরে বৃষ্টি হয় না। অর্থাৎ খরা মৌসুম বিরাজ করছে। তিনি বলেন, ‘দু-এক দিন যে ৮ মি.মি., ১০ মি.মি.’র মতো বৃষ্টি হয়েছে তাতে ধুলোবালিগুলোও ভিজে যায় না আরকি।’

কৃষিতে কী প্রভাব পড়ছে?
দিনাজপুর জেলার বরইল গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম। কৃষিকাজই তার পেশা এবং এরইমধ্যে দুই একর জমিতে রোপা আমন ধান রোপণ করেছেন তিনি। তিনি জানান, শুধু দিনাজপুর নয় বরং পুরো উত্তরবঙ্গই বৃষ্টিপাতের অভাবে ভুগছে। ‘মাটি ফাটে চৌচির অবস্থা। মানুষ ধান রোপণ করতে পারছে না। বর্ষাকাল তো শেষ হয়ে গেলো প্রায়।’ পানি না থাকায় শ্যালো মেশিন বা অগভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে সেচ দিয়ে রোপা আমন রোপণ করছে কৃষকরা। প্রতি তিন দিন পর পর সেচ দিতে হয় ধানক্ষেতে।‘প্রচণ্ড খরা। রাতে যে বৃষ্টি হইলো ওইটা দিয়ে কিছু হবে না। ওটা মাটি ভেজা বৃষ্টি।’একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানান আরেকজন কৃষক নূর ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই দিকে ধান লাগানো যাচ্ছে না। গোটা আষাঢ় মাস ধরি বৃষ্টি নাই। শ্যালো মেশিন দিয়ে ধান লাগাচ্ছি। কিন্তু মোটর তো চলে না, কারেন্ট থাকে না দেশে।’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, দিনাজপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ দিনাজপুর ছাড়াও আরো দুটি জেলা যথা ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের কৃষি বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি  বলেন, তিনটি জেলাতে ৪ লাখ ৯৮ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ করার লক্ষ্য মাত্রা রয়েছে। তবে গত ১৫ দিনের খরার কারণে আমন রোপণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে আমন রোপণ করা হয়েছে। আর এগুলোর সবগুলোই করা হচ্ছে সম্পূরক সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে। ‘গত বছর একই সময়ে এক লাখ ৭০ হাজার হেক্টরে রোপণ হয়ে গিয়েছিল। সে হিসেবে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে এখনো পিছিয়ে আছি আমরা,’ বলেন এই কৃষি কর্মকর্তা। প্রদীপ কুমার গুহ জানান, কৃষকদের মধ্যে মানসিক প্রস্তুতি থাকে যে বৃষ্টিপাত হলে সেই পানির সহায়তায়ই ধানের চারা রোপণ করার। সেচের মাধ্যমে নয়। আর সেচ যেটা দেয়া হচ্ছে, দুদিন পরেই সেটি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে, গত দুই বছর পাটের ভালো দাম পাওয়ার কারণে এবছর এই ফসলটির উৎপাদন বাড়লেও পানির সংকটের কারণে পাট কাটতে পারছেন না কৃষকরা। এছাড়া সবজি চাষ, ফল বাগানের প্রস্তুতি ও পরিচর্যায়ও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, রোপা আমন রোপণের সময়সীমা যেহেতু ১৫ আগস্ট পর্যন্ত রয়েছে। তাই আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে। তবে যেসব আগাম চারা এরইমধ্যে রোপণ উপযোগী হয়ে গেছে এবং বড় হয়ে যাচ্ছে – সেগুলো নিয়ে কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

খরা পরিস্থিতির কারণ কী?
বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বরকে বর্ষাকাল হিসেবেই গণ্য করা হয়। বর্তমানে শ্রাবণ মাস চলছে যা বাংলাদেশে ভরা বর্ষা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। তবে এমন সময়েও বৃষ্টি না হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, এই সময়ে সাধারণত বেশ বৃষ্টিপাত হয়। তবে কোনো কোনো বছর ‘ব্রেক মনসুন’ তৈরি হয়। ব্রেক মনসুন হচ্ছে বর্ষাকাল হওয়া সত্ত্বেও টানা বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকা। এর পেছনে নানা ধরনের কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে হিমালয়ের পাদদেশে মৌসুমি বায়ুর পরিবর্তনের কারণে পাদদেশ ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাতের হার অনেক কমে যায়। তবে এ সময়ে পাদদেশ এলাকায় বৃষ্টিপাত বেড়ে যায়। নাজমুল হক বলেন, লা-নিনার প্রভাবের কারণেও বৃষ্টিপাত কম হয়ে থাকে। এবার এই লা-নিনার প্রভাব শুধু বাংলাদেশে নয় বরং বৈশ্বিক একটি প্রভাব রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি যুক্তরাজ্যের কথা উল্লেখ করেন যেখানে এই সময়ে শূন্য থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা হওয়ার কথা থাকলেও কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ফ্রান্সেও একই কারণে ভয়ংকর ধরনের দাবদাহ চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ুর বিশেষ ধরনের পরিবর্তনের কারণে ঋতু পরিক্রমায় পরিবর্তন আসছে। ‘সময়টা শিফট (পরিবর্তন) হয়ে গেছে যেমন, বর্ষার সময় বর্ষা হচ্ছে না, শীতের সময় শীত হচ্ছে না, শীত হয়তো হচ্ছে কিন্তু যে সময়ে শীত হওয়ার কথা, সেটা না হয়ে আরো পরে চলে গেছে,’ বলেন তিনি। নাজমুল হক বলেন, ‘আমরা যদি অন্যান্য সিজন যদি খেয়াল করি, তাহলে দেখা যাবে যে বর্ষাটা কিছুটা শিফট হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম যে, জুলাই মাসে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বৃষ্টিপাত হবে। আর ঘটেছেও তাই।’ অন্যদিকে জুন মাসের দিকে খেয়াল করলে দেখা যাবে যে শুধুমাত্র বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলই নয় বরং ভারতের আসাম রাজ্যে অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।তিনি বলেন, ভারতের ওই অংশে এক দিনে ৯৭০ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের একটা বিভাগের একটা বছরের বৃষ্টিপাতের সমান প্রায়। আর আসামের এই প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের কারণেই রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছিল। অন্যদিকে জুলাই মাস বৃষ্টিহীন থাকার কারণে খরার মুখে পড়ছে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল। তবে আগামী ২৩ ও ২৪ জুলাই থেকে উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। সূত্র : বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরও খবর
Copyright &copy 2022 The Daily Uttar Kon. All Rights Reserved.
Powered By Konvex Technologies