স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান এমপি বলেন, সন্ত্রাস ও মাদক আমাদের জাতীয় জীবনের সমস্যা। আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করতে হবে। তাদের নিয়ে আমাদের স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং আগামীতে উন্নত দেশে পরিণত হবে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদক আসে। মাদকের ভয়াবহ ছোবলে পড়ে এদেশের যুব সমাজ বিপথগামী হয়ে থাকে। মাদকে বিপথগামী ছেলেরা অধিকাংশই সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ে। এদেরকে রক্ষা করতে হলে আমাদের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। মাদক ও সন্ত্রাস নির্মুলে পুলিশের পাশাপাশি জনগণকেও ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে না পারলে একদিকে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো পাশাপাশি দেশেরও অনেক বড় ক্ষতি হবে। আমাদের দেশে মাদক তৈরির কারখানার অনুমোদন দেয়া না হলেও ভারতীয় সীমান্ত হতে মাদক ও ফেন্সিডিল আসে। মাদক ও ফেন্সিডিল আসা বন্ধে সীমান্ত এলাকায় ফেন্সিডিল কারখানাগুলোকে বন্ধে অনুরোধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু কারখানা বন্ধ হয়েছে এবং ধীরে ধীরে অন্যগুলো বন্ধ করছে। মায়ানমার থেকে ভয়াবহ ড্রাগ ইয়াবা আসে যা যুব সমাজকে ধ্বংস করছে। একটানা দুই বছর ইয়াবা সেবনে কর্মক্ষমতা হারানোর পাশাপাশি কিডনীর সমস্যা হয়ে থাকে। আমরা ইয়াবা দমনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করছি। তিনি আরো বলেন, মাদক অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ব্যবসা অনেকেই করে থাকেন। আমাদের ডাকে যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের পাশে রয়েছে। যারাই আত্মসমর্পণ করেছেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান সরকার তাদের পাশে রয়েছে। আর যারা মাদক ব্যবসা করবেন তাদের কি হবে তা জানিনা, আপনাদের কাছে আহ্বান ফিরে আসুন স্বাভাবিক জীবনে। যারা মাদকে আসক্ত তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য পাশে দাঁড়াতে হবে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ৯৯৯ জরুরি সেবার মাধ্যমে যেকোন সমস্যায় পুলিশ প্রশাসনকে হাতে নাগালে পাবেন। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশের এক গুরুত্বপূর্ণ সুফল। অপরদিকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এ মানবিকতার কারণে সারাবিশ্বে মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা যদি বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। মঙ্গলবার বগুড়া পুলিশ লাইন্স মাঠে মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। বগুড়া জেলা পুলিশের আয়োজনে মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন বিপিএম, পিপিএম এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বগুড়ার শেরপুর-ধুনট আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান, সারিয়াকান্দি-সোনাতলা আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান, গাবতলী-শাজাহানপুর আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু, জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা পরিষদ প্রশাসক ডাঃ মকবুল হোসেন, বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহমুদুল আলম নয়ন। সমাবেশে বগুড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। সমাবেশের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি বগুড়ায় করোনায় মৃত পরিবহন মালিকদের পরিবার ও দুস্থ শ্রমিকদের আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে ১২টি পরিবারের হাতে ৫০ হাজার টাকা করে ৬ লাখ টাকার চেক তুলে দেন। এছাড়াও মাদক ব্যবসায়ীদের স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তনে ৫০জন পুরুষকে ৫০টি ভ্যানগাড়ি ও ১৫ জন নারীকে ১৫টি সেলাই মেশিন তুলে দেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহাদাৎ আলম ঝুনু। এর আগে পুলিশ লাইন্সে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ম্যুরাল ‘মুক্তির অমর কাব্য’ উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি।