আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারকে বিদায় করা হবে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের পতন শুরু হয়ে গেছে। মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশে তিনি বলেন, গতকাল সোমবার আবারও খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ নিয়ে খালেদা জিয়ার চতুর্থ দফায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গতকাল (সোমবার) রাত ১২টার দিকে হঠাৎ করে ডা. জাহিদ হোসেন আমাকে ফোন করে বলেন, দ্রুত হাসপাতালে আসেন। আমি সেখানে গিয়ে দেখি অন্তত ১০ জন চিকিৎসক বসে আছেন। ঘরে ঢুকে আমি জানতে চাই, কী হয়েছে। তাদের অন্তত চিন্তিত দেখাচ্ছিল। তারা জানালেন, যেটা ভয় পাচ্ছিলাম, সেটাই হয়েছে। আবারও আজ (সোমবার) সন্ধ্যায় তার রক্তক্ষরণ হয়েছে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারকে বিদায় করা হবে উল্লেখ করে এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য, দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য তরুণ-যুবকদের জেগে উঠতে হবে। তরুণ-যুবকদের ছাড়া এদেশে কোনো আন্দোলন হয়নি। অবশ্যই এ সরকারকে সরাতে হবে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে এ সরকাকে বাধ্য করা হবে। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারকে বিভিন্ন দেশ থেকে চাপ দিয়েছে। সরকার মিথ্যা কথা বলছে।
ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, এই সরকার কখনোই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিবেনা। আমাদেরকে রাজপথে সংগ্রামের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে হবে। আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে সারা দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় এবং তার সুচিকিৎসা চায়। আপনারা জানেন, বেগম জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছেন। ডাক্তাররা প্রতিনিয়ত বলছেন তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য। কিন্তু এ সরকার কর্ণপাত করছে না। আমি একটা কথা পরিষ্কার বলতে চাই, যদি খালেদা জিয়ার কিছু হয় তাহলে এই দায় সরকারকেই নিতে হবে। আমান উল্লাহ আমান বলেন, আজকে এটি ছিল সমাবেশ। কিন্তু আপনারা দেখেন, ওইদিকে মতিঝিল শাপলা চত্বর, এদিকে কাকরাইল, নটর ডেম কলেজ, ফকিরাপুল, মালিবাগ, নাইটিংগেল মোড়ে নেতাকর্মীদের ঢল। এই সমাবেশ মহাসমাবেশ হয়ে গেল। আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে মহাসচিবের ঘোষিত সমাবেশ হয়ে গেল মহাসমাবেশ। তিনি বলেন, ’৫২ সালে যেমন রক্ত দিয়েছিলাম, ’৬৯ এর গনুভ্যথানে রক্ত দিয়েছিলাম, ’৭১-এ মহান স্বাধীনতা আর ৯০-এ রক্তের বিনিময়ে আবার গণতন্ত্র পেয়েছিলাম। এই ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে আরেকটি গণঅভ্যুথানের মধ্যে দিয়ে আবার একটি গণতন্ত্র আদায় করতে হবে। ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আপনাদের উদ্দেশ্যে একটি বাণী দিয়েছেন, ‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ।’ সেই শহীদ জিয়ার বাংলাদেশ গড়ে তলার জন্য, তারেক রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার জন্য, দেশনেত্রীর গণতান্ত্রিক দেশ ফিরিয়ে পাবার জন্য রাজপথে আরো একটি যুদ্ধ হবে। আসুন দুই হাত তুলে আমরা এই যুদ্ধে অংশ নেয়ার শপথ করি। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা জেলা সভাপতি দেওয়ান সালাহউদ্দিন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষকদলের সাধারণড় সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমূখ।