খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবি চেয়ে সরকার পতনের দাবিই মূল হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান তিনি ক্ষমা করবেন কি করবেন না সেটা বলা যায় না। আবার ক্ষমা করতেও পারেন। কিন্তু এই ফ্যাসিস্ট সরকার, দানবের মত আচরণ ছেড়ে মানবিক হবে সেটা প্রত্যাশা করি কি করে।’
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সম্মিলিত ছাত্র যুব ফোরাম আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ প্রেরণ ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজিব আহসানের মুক্তির দাবি এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশের একজন সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে। কারণ রাষ্ট্রের মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে চিকিৎসা অন্যতম। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমা চাইবেন, এটা বলে তাকে আরও মানসিকভাবে চাপ দেওয়া হল। দেশে যদি আইন থাকতো তাহলে এটার বিচার হতো। পৃথিবীর এমন কোন দেশ আছে? যেখানে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাতে হয়। খালেদা জিয়া জনগণের জন্যই বেঁচে থাকবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে পত্রিকায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়া যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান তাহলে মানবিক বিবেচনা করা হবে। ক্ষমা চাইলেই রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করবেন কি করবেন না সেটা বলা যায় না। আবার ক্ষমা করতেও পারেন। এখানে মানবিক কোন দিক সরকারের হাতে থাকে না। খালেদা জিয়ার বাড়িকে সাব-জেল ঘোষণার কথা জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় একটা জিনিস পরিষ্কার। তিনি বলেছেন আমার যতটুকু ক্ষমতা ছিল ততটুকু ক্ষমতা দিয়ে তাকে জেলখানা থেকে বাড়িতে রেখেছি। আমি সরকারের উদ্দেশ্যে বলবো, আপনি যদি জেলখানার পরিবর্তে খালেদা জিয়ার বাড়িতে ডাম্পিং করে থাকেন, তাহলে খালেদা জিয়ার বাড়িটাকে সাব-জেলে ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ফাঁসির আসামিকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য ফাঁসির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তাকে চিকিৎসা সেবা দিতে হয়। এটা সরকারের দায়িত্ব। ফাঁসি দেওয়ার আগ মুহূর্তে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেজন্যই বলছি, বিচার তখনও চাওয়া যায়, যখন ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু এখন বাংলাদেশের ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সরকারের প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দুটো এক হয়ে গেছে। এখন শেখ হাসিনা এমন অবস্থায় গেছে তার কথাই শেষ কথা, তার কথাই আইন, তার কথায় সংবিধান। হয়তো দুদিন পরে তার কথাই হবে ধর্ম।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা যারা বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার অবস্থা আছে তাদের শপথ করা উচিত। আমার নেত্রী যদি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না পারেন, তাহলে আমরাও কখনো যাব না। দরকার হলে বিনা চিকিৎসায় দেশে মারা যাবো। সম্মিলিত ছাত্র যুব ফোরামের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাহিদুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল প্রমুখ।