বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং তাকে বিদেশে পাঠাব।’ এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্ত এবং তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা আগামী ২৪ নভেম্বর সব জেলা পর্যায়ে দলের নেতৃবৃন্দরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেবে। এরপরও বেগম জিয়াকে যদি মুক্তি না দেওয়া হয়, আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে আমরা এগিয়ে যাব। বর্তমান সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে ফেলেছে। দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। তাই আজকে আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আমি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানাচ্ছি— আসুন একসঙ্গে গণতন্ত্রের নেত্রীকে এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করি এবং আগামী দিনে নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে আমরা একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দাবিতে’ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বন্ধুরা আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। আমাদের সামনে একটাই পথ। আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলন। আন্দোলনে আরও তীব্র করে সামনের দিকে বেগবান করতে হবে। ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে, আমি আমার দলের ভাইবোনদের বলতে চাই- হঠকারিতা করবেন না। অতীতে অনেক হঠকারিতার জন্য আমাদেরকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকেই এই সমাবেশই প্রমাণ করেছে- এ দাবি বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের নয়নের মনি বিএনপি চেয়ারপারসনকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং তার চিকিৎসার জন্য তাকে বাইরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এই সমাবেশ আরও প্রমাণ করেছে— এই সরকার কী ভয়ঙ্করভাবে আমাদের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিচ্ছে। আমাদের একটা সমাবেশের জায়গা পর্যন্ত দেওয়া হয় না। সব জায়গা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে সমাবেশ কেন্দ্র করে সকাল ৮ থেকে ব্যানারসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবে সমাবেত হন। মিছিল থেকে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তুলেন। এদিকে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে প্রেসক্লাবসহ এর আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সাদা পোশাকে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলার বাহিনীসহ অতিরিক্তি পুলিশও মোতায়েন রয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, খন্দকার মাশুকুর রহমান, সহজলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী বক্তব্য রাখেন।