আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ উত্তর জনপদের চালের বড় মোকামের মধ্যে আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার একটি। এখানে ১৪ অটো চালকল সহ কয়েক শত চালকল রয়েছে। এসব চালকলে প্রতিদিন প্রায় অর্ধলাখ বস্তা চাল উৎপাদন হয়। উৎপাদিত চালের অধিকাংশ ঢাকা ও চট্টগ্রাম সহ সারা দেশে বাজারজাত করা হয়। এই বিপুল চালের মোড়ক হিসাবে অবাধে ব্যবহার করা হয় প্লাস্টিক বস্তা। প্লাস্টিক বস্তা মানব দেহ এবং পরিবেশের জন্য মারাতœক ক্ষতিকর হবার কারনে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছেন। কিন্তু সে আইন মানছেন না প্রভাবশালী চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা। পাটের বস্তার মুল্যের চেয়ে প্লাস্টিকের বস্তার মুল্য প্রায় ৩০ টাকা কম। ফলে নিষিদ্ধ জানা সত্বেও তাঁরা প্লাস্টিক বস্তা ব্যবহার করছেন। মাঝে মধ্যে পাট অধিদপ্তর থেকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে চালকল মালিকদের অর্থদন্ড দিলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে সচেতন মহল প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারি না করাকে দায়ী করেছেন। এদিকে কিছু চালকল মালিক সরাসরি প্লাস্টিক বস্তা ব্যবহার না করে কৌশলে ব্যবহার করে। তাঁরা চটের অতি পাতলা বস্তার ভিতরের আস্তিন হিসাবে প্লাস্টি বস্তা ব্যবহার করে। ব্যাপারটি প্রশাসন এবং ভোক্তাদের চোখে ধুলো দেওয়ার কৌশল। আদমদীঘি ও সান্তাহার সহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে প্রতিটি চাল মার্কেটে প্লাস্টিক বস্তার ছড়াছড়ি দেখা যায়। হাট-বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা জানান, চালকল মালিকরাা যে ভাবে বাজারজাত করে আমরা সে ভাবে কিনি এবং বিক্রি করি। এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অটো এবং হাস্কিং চালকল মালিক বলেন, গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে অনিচ্ছা সত্বেও প্লাস্টিক বস্তায় চাল বাজারজাত করতে হচ্ছে। সম্প্রতি পাট অধিদপ্তর বগুড়ার কর্মকর্তার চাহিদা মোতাবেক আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় উপজেলা সদরের মেসার্স মোত্তাকিন অটোমেটিক এবং সান্তাহারের মেসার্স সালমান অটোমেটিক চালকল থেকে বিপুল পরিমান প্লাস্টিক বস্তা জব্দ এবং পৌনে এক লাখ টাকার অর্থদন্ড দেন। কিন্তু এর পরও থামছে না নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বস্তার ব্যবহার। সচেতন মহলের দাবী সবার আগে প্রয়োজন প্লাস্টিক বস্তার উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধ করে দেওয়া।