বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে। তিনি বলেন, এ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে। এখন তারা দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত সাত মাসে ইউনিয়ন পরিষদের যে নির্বাচন হয়েছে, সেখানে বিরোধীদলের কেউ নেই। সেখানে শুধু তারা-তারাই (আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ)। তারপরও নির্বাচনী মারামারিতে ৮৭ জন মৃত্যুবরণ করেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে তারা।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের নাম উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘আসুন ঢাকা শহরে আগের মতো গণতন্ত্রের পক্ষে একটা দুর্ভেদ্য দুর্গ গড়ে তুলি। এ দুর্গ এমনভাবে গড়ে তোলা হবে যে গণতন্ত্রের নেতাকর্মীদের কাছে, স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের কাছে এ ফ্যাসিস্ট সরকার পরাজিত হবে।’ সাদেক হোসেন খোকার স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী নেতা। তিনি যখন মেয়র ছিলেন তার কাছে সহযোগিতা পাননি এমন কোনো রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি নেই। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের ভয়াবহতা থেকে মুক্তির জন্য জন্য দরকার ছিল খোকার মতো একজন নেতা। আমাদের প্রত্যেককে এক একজন খোকা হয়ে তৈরি হতে হবে। বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, আমরা আজ এমন একটা দুঃশাসনের কবলে পড়েছি। আজকের খবরের কাগজে দেখবেন ডিজেল, কেরাসিনের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যেটা ৬৫ টাকা ছিল, করা হলো ৮০ টাকা। যেটা ছিল ৫৫ টাকা, সেটা করা হলো ৭০ টাকা। এলপি গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আর প্রতিবছর তিন-চারবার করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। বাজারে যাবেন কোনো কিছুই কেনার জো নেই। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, ইতোমধ্যে ধর্মঘট দেয়া হয়েছে। কাল থেকে বাস মালিকরা বলবে ভাড়া বাড়াও, না বাড়ালে আমরা চালাতে পারব না। একই কথা বলবে ট্রাক চালকরা। অর্থাৎ কাঁচাবাজার- চাল, ডাল সবকিছু দাম বাড়বে। এ সরকার কতটা দায়িত্ব জ্ঞানহীন হলে, কতটা জনগণের সাথে সম্পর্কহীন হলে এ ধরনের অমানবিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বাংলাদেশে ডিজেলের-তেলের দাম বাড়ল আর পার্শ্ববর্তী ভারতে ৫ টাকা করে কমিয়ে দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে দেশে দাম বাড়ানো হয়েছে বলে সরকারের এ বক্তব্যের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যখন কমে গিয়েছিল তখন তো তুমি (সরকার) তেলের দাম বেশি নিয়েছ। কম তো রাখো নাই। তাহলে কি করেছ, চুরি করেছ। এখন যা করছ, সেটা হলো আমাদের পকেট কেটে তোমাদের পকেট ভরাচ্ছো।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন প্রমুখ।