বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যেহেতু আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে সে কারণে তারা সব কিছুই বলছে। বিএনপি সেভাবে সত্য কথাগুলা বলতে পারছে না। বিএনপির দাবি মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যদি তত্বাবধায়ক সরকার তৈরি করেন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসলে সরকার সেটা সামাল দিতে পারবে না। তখন বোঝা যাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা। তারেক রহমান যেদিন দেশে আসবেন সেদিন ঢাকা শহরে কোনো জায়গা থাকবে না এবং মানুষের যে ঢল নামবে তা ঠেকানোর ক্ষতা কারো থাকবে না।
আজ বুধবার দুপুরে তার নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের কালীবাড়ির বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনসহ বিএনপি অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের আগে থেকে একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এক এগারোর সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নির্মূল করে দিয়ে বিরাজনীতিকরণের পক্রিয়া শুরু করেছিল তার সাথে যুক্ত ছিলো আওয়ামীলীগ। সেসময় মাইনাস টু থিউরির মাধ্যমে শির্ষ দুই নেত্রী শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছিল। এই প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়া সেসময় সেই সরকারের সাথে কোনো আপস করেন নাই। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই অশুভ শক্তির সাথে আঁতাতে গিয়েছিল এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সামরিক সরকারকে বৈধতা দিয়েছিল। তিনি আরো বলেন, সেসময় আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্রকে দূর করে দিয়ে কতৃত্ববাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তাকে বেআইনি ও অযৌক্তিকভাবে বিভিন্ন মামলায় তার অবর্তমানে সাজা দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যতগুলো অভিযোগ করা হয়েছে তার একটিও প্রমাণিত হয় নাই এবং পৃথিবীর কোথাও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে যে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সমস্যা ও সম্পত্তি দখলের পেছনে আওয়ামী লীগের লোকেরাই জড়িত। সম্প্রতি দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ক্ষুণ্ণ করার যে চেষ্টা হয়েছে সেগুলো সরকারের মদদেই হয়েছে। যা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরাও বুঝেছেন এবং এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ যে উন্নয়নমূলক কাজ করছে তার সবগুলোই দুর্নীতি উন্নয়ন। আওয়ামী লীগের নেতারা কয়েক বছরে যে সম্পদ করেছেন তার পরিমাণ হিসেব করলেই বোঝা যাবে কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে। যে পদ্মা সেতু তৈরিতে ১০ হাজার কোটি ডলারের প্রজেক্ট শুরু হয়েছিল তা এখন ৪০ হাজার কোটিতে গিয়ে ঠেকেছে। এটা পরিস্কার যে আওয়ামী লীগ একদলীয় সরকার চালু করে যে দুর্নীতি করেছে এবং করছে তাতে এদেশের মানুষ দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। সরকারি দলের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে ,ফলে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অনেক বেড়ে গেছে। এতে কৃষক তার পণ্যের দাম পাচ্ছে না এবং ভোক্তাদের বেশি মূল্যে পণ্য কিনতে হচ্ছে। বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন দল আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের উত্তরে ফখরুল আরো বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিলে প্রমাণ হবে বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন দল কি না।