ঢাকা : ই-কমার্স ব্যবসায় অনিয়মে জড়িয়ে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম মন্ত্রিপরিষদ গঠিত কমিটির কাছে হস্তান্তর করেছে তিনটি গোয়েন্দা সংস্থা। এসব নাম যাচাই বাছাই শেষে ১১ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে রিপোর্ট পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কমিটির সমন্বয়ক এএইচএম সফিকুজ্জামান।
সোমবার (১ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান তদারকি ও পরিবীক্ষণের আওতায় আনা এবং সাম্প্রতিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অনৈতিক ব্যবসার ফলে যে সব ভোক্তা প্রতারিত হয়েছেন তাদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, গত ১৮ তারিখে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ই-কমার্স খাতের পুনর্গঠনে ৭টি বিষয়ে মেন্ডেট দিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে ও উত্তরণের পথ বের করতে সুপারিশ করবে এই কমিটি। তিনি বলেন, ই- কমার্স ব্যবসা নিয়ে এখন যে বিষয়টা হয়েছে তা নিয়ে আমাদের এক মাস সময় দেয়া হয়েছিল মন্ত্রিপরিষদকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। গত ১৮ তারিখ কমিটির প্রথম বৈঠকে আমাদের ৭টি বিষয়ে নজর দিতে বলা হয়। বিশেষ করে আমাদের যে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান আছে তাদের তালিকা দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমাদের যে গোয়েন্দা সংস্থা আছে তারা তালিকা দিয়েছে। এখানে আমরা তিন সংস্থা থেকে তিনটা তালিকা পেয়েছি। এক বাহিনী দিয়েছে ১৯টির নাম, আরেক বাহিনী ১৭টা ও অপর বাহিনী ১৩টির তালিকা দিয়েছে৷ আমরা মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এগুলো সমন্বয় করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়ল ইন্টিলিজিন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) দেওয়া হবে। তারা এই তালিকা ধরে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ নেবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের হিসাব হাতে পাওয়া যাবে। আগামী ৯ তারিখে আরেকটা মিটিং হবে। সেই মিটিংয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক লেনদেনের হিসাব উত্থাপন করা হবে। মিটিংয়ে তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে ১১ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উত্থাপন করব।
অভিযুক্ত যে ১৯ কোম্পানির নাম এসেছে তাদের টাকার পরিমাণ কেমন? -এ প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটার জন্যই তথ্য চাচ্ছি আমাদের ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের কাছে। ১৯টা না আরও আছে। বাকি যে ১৭টি আছে তার মধ্যে কমন আছে ৮টি। সেক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১৯ এর বেশিই হবে। তাদের তালিকা জাস্ট সিলগালা করে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে দেব৷
কে কতটা অভিযুক্ত এমন প্রশ্নে- বিএফআইইউর মহাব্যবস্থাপক শওকতুল আলম জানান, সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে কিছু ক্রাইটেরিয়া দেওয়া আছে। সেগুলোর ভিত্তিতে তারা মনিটরিং করে। তারা কোনো আনইউজুয়াল ট্রানজেকশন দেখলে বিএফআইইউকে রিপোর্ট করে। পরে আমরা আরও তথ্য যাচাই করে সেই প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেই। এছাড়া পত্রপত্রিকার প্রতিবেদনও গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করে বিএফআইইউ। কেউ ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ করলে সেটাও আমরা বিবেচনায় নিয়ে থাকি।