উত্তরকোণ ডেস্ক : সরকার পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমার শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা কোনো মিছিল বা র্যালি করছি না। সম্প্রীতির স্বার্থে আমরা মিছিল করছি না। আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি অস্থায়ী মঞ্চে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ‘ব্যর্থতার’ প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করার কথা ছিল বিএনপির। কিন্তু সকালে এ কর্মসূচি বাতিল করা হয়। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বন্ধুগণ আপনারা দয়া করে শান্তিতে থাকবেন। আমার শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা হিন্দু, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ভাইদের ওপর হামলা অবশ্যই সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করব। সরকার ব্যর্থ হয়েছে এ সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা দিতে। সেজন্য আমরা এ সমাবেশ করছি। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে। তার প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে একটা র্যালি করে প্রেসক্লাব পর্যন্ত যাব। এর জন্য আগে আমরা চিঠিও দিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ সকাল থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সবশেষে আমরা এখানে (নয়াপল্টন) সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করছি। তিনি বলেন, যখন মানুষ তার ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকারের জন্য আন্দোলন শুরু করেছে, চাল-ডাল ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে সোচ্চার হচ্ছে ঠিক সেই সময় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্রে করে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে একটা দাঙ্গা বাজিয়ে দিয়েছে সরকার। দেশে একটা নৈরাজ্যকর অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তারা পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়, বৌদ্ধ সম্প্রদায় এমনকি মুসলমানদের ওপর আঘাত করেছে। তাদের লক্ষ্য এক দলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার যে হীন প্রচেষ্টা সেই লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৮ সাল থেকে তারা ক্ষমতায় আছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে ধ্বংস করেছে। সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস দেয়নি। একটা সমাবেশ করার জায়গাও দেয় না। বিএনপির প্রতিবাদ মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশ দলের ৫০ জনের মতো নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে বলে দাবি করেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সরকার পরিবর্তন এখন জনগণের দাবি। আওয়ামী লীগের আর ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন দেন। সমাবেশ থেকে সাম্প্রদায়িক হামলায় যেসব মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং যারা পুলিশের গুলিতে মারা গেছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান মির্জা ফখরুল। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় সমাবেশ বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।