লালমনিরহাট প্রতিনিধি : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টির কারণে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৬টায় ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্যারাজের ভাটিতে থাকা হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানিবন্দি রয়েছে অন্তত ১৫ হাজার পরিবার। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি বাড়ার ফলে ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস সড়কটির ১৫০ মিটার অংশ ভেগে যাওয়ায় লালমনিরহাটের বড়খাতা হয়ে তিস্তা ব্যারাজের ওপর দিয়ে নীলফামারীর সরাসরি সড়ক যোগাবন্ধ বন্ধ রয়েছে। এদিকে বুধবার রাতে পানির তোড়ে গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুর কাকিনা-রংপুর সড়কের মিলনবাজার এলাকায় কিছু অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় ওই সড়ক দিয়েও যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি জেলার চার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ব্যারাজের ভাটিতে থাকা হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সির্ন্দুনা, ডাউয়াবাড়ি, পাটিকাপাড়া, সিঙ্গিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, তুষভাণ্ডার, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ ও গোকুণ্ডা ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোর বাসিন্দারা রয়েছে চরম দুর্ভোগে। তাদের অনেকেই বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে। তিস্তা ব্যারাজের উজানে থাকা পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নেরও বেশ কয়েকটি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে আকস্মিক এ বন্যার কবলে নষ্ট হয়েছে উঠতি আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় গতকাল সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এসব ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর। বানভাসি মানুষের জন্য ৭০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।