উত্তরকোণ ডেস্ক : জাতীয় পার্টির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মোহম্মদ এরশাদের তো ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১০ আক্টোবর আমরা যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুনলাম সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার আমাদের ছাত্রদলের এক নেতা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। সারা বাংলাদেশের রাজপথ উত্তাল সমুদ্রের মতো ধেয়ে আসলো। তিনি বলেন, সেদিনই হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বার্তা পেয়ে গেলেন এবার আর কোনোভাবে তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না। বন্ধুরা এই লোক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের তো ফাঁসি হওয়ার কথা ,ওনার মৃত্যুদণ্ড হওয়ার কথা।আজ রবিবার (১০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপির নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তার ক্ষমতায় আসেন। আর এরশাদ তখন বলেন সেনাবাহিনীকে অংশীদারিত্ব দিতে হবে। কত বাড় সাহস এই লোকের। তারপর রাতের অন্ধকারে রাইফেল নিয়ে জোর করে বৃদ্ধ বিচারপতিকে তিনি ক্ষমতাচ্যুত করলেন। তারপর তাকে একটি বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হল। পরে বিচারপতি সাত্তার নিজেই বলেছেন যে তাকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে এ বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এরশাদ যে ডাকাত, এরশাদ যে দস্যু, এরশাদ যে গণতন্ত্র হত্যাকারী এটার আর কোনো প্রমাণ লাগে না। রিজভী বলেন, এরশাদ অনেককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছেন। আওয়ামীলীগকে ম্যানেজ করেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে ম্যানেজ করেছেন, বিএনপিকে ভাগ করে হুদা-মতিন বিএনপি বানিয়েছেন। কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত আন্দোলনে সমস্ত কিছু ভেসে গেছে। বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, যখন আওয়ামী লীগ ও জামায়াত নির্বাচনে যেতে রাজি হয়েছেন তখন বেগম খালেদা জিয়া হিমালয়ের মতো মাথা উঁচু করে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন আগে এরশাদের পদত্যাগ তারপর নির্বাচন। কারণ স্বৈরাচারের সাথে কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। স্বৈরাচার যেকোনো গলি দিয়ে ঢুকে আবার গণতন্ত্রের ঘাড় মটকে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, এসবের জন্য বেগম খালেদা জিয়া ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কি কষ্ট সহ্য করতে হয়নি? নয় বছরে সাত বার গৃহবন্দি হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। আর একাত্তরের কথা তো সবাই জানেন। সেদিনও তিনি শিশু সন্তানদের নিয়ে বন্দি ছিলেন। এই নির্যাতন নিপীড়নের মধ্যেও তার যেই কমিটমেন্ট সেখান থেকে তিনি কোনোদিন বিচ্যুত হননি। এজন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজও মহিয়ান। আজ তার সন্তান সেই পতাকাকে ধারণ করে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। অনেক চেষ্টা করা হয়েছে বিএনপির নেতৃত্বে ফাটল ধরানোর। কিন্তু তারা তা পারেনি। এটাই আমাদের প্রেরণা। এসময় বিএনপিতে তারেক রহমানের নেতৃত্ব অপরিহার্য বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিশেষ সম্পাদক ড.আসাদুজ্জামান রিপন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ বক্তব্য দেন। আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালী প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।