উত্তরকোণ ডেস্ক : রোববার (১০ অক্টোবর) এলপি গ্যাসের নতুন দর ঘোষণা করবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আমদানিকারকদের আবেদনে গণশুনানির প্রেক্ষিতে নতুন এ দর ঘোষণা করতে যাচ্ছে বলে বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপি গ্যাসের দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে প্রতি মাসের ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছে। সৌদির দর উঠা-নামা করলে এলপিজির মূল্য উঠানামা করবে। আমদানিকারকের অন্যান্য কমিশন ও খরচ অপরিবর্তিত থাকবে। কমিশনের সেই নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি মাসে দর ঘোষণা করে আসছে। বাস্তবে বিইআরসি ঘোষিত দর খুব কম ক্ষেত্রেই কার্যকর হতে দেখা গেছে। গত ১২ এপ্রিলের আগে পর্যন্ত এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। দর নির্ধারণের বিষয়ে অনেকদিন ধরেই কথা হলেও জ্বালানি বিভাগ, বিইআরসি নাকি বিপিসি করবে সে নিয়ে ছিল রশি টানাটানি। সর্বশেষ ক্যাবের এক রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এলপিজির দর নির্ধারণ না করায় বিইআরসিকে শোকজ করে। সে মোতাবেক গত ১৪ জানুয়ারি গণশুনানি নিয়ে ১২ এপ্রিল দর ঘোষণা করা হয়। দর ঘোষণার দিনেই আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়। তারা দারি করে দর বেশি হওয়া উচিত ছিল। এরপর থেকে বিইআরসির সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয় লোয়াবের। তারা প্রতিমাসের দর ঘোষণার সিদ্ধান্তও বর্জন করে। বিভিন্নভাবে বিইআরসির ওপর চাপ তৈরি করে। এমনকি এলপিজি আমদানি বন্ধ করার হুমকি দেন লোয়াবের সভাপতি আজম জে চৌধুরী।
এক পর্যায়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ অনেকটা ব্যবসায়ীদের সুরেই কথা বলতে থাকেন। বিইআরসি বাধ্য হয়ে নতুন করে গণশুনানির তোড়জোড় শুরু করেন। বিইআরসির অনুরোধেই নতুন গণশুনানির জন্য আবেদন করে আমদানিকারকরা। করোনার কারণে প্রথম ঘোষিত গণশুনানির তারিখে শুনানি বন্ধ হয়ে যায়, পরে কোর্টের নির্দেশনার কারণে কিছুদিন বন্ধ থাকে, সব জটিলতা দূর হলে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর গণশুনানি গ্রহণ করা হয়।
বর্তমানে ব্যাংকের সুদ বাবদ ৭ শতাংশ অনুমোদন রয়েছে, অপারেটররা এটিও বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, ৮ শতাংশ রিটার্ন অন ইকুইটিকে ৯ থেকে ১২ শতাংশ করা, পরিবেশক ও খুচরা বিক্রেতাদের কমিশন বাড়ানো প্রস্তাব দিয়েছে অপারেটররা। তাদের এসব আবেদনের সপক্ষে কোনো বিশ্লেষণ জমা দেওয়া হয়নি। অতীতে দেখা গেছে বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাসের এমন অসম্পূর্ণ আবেদন কমিশনের বৈঠকেই বাতিল করা হয়েছে। তা আর গণশুনানিতে নেওয়া হয়নি। কিন্তু এলপিজির ক্ষেত্রে তা অনুসরণ না করায় হতাশ ভোক্তার প্রতিনিধিরা।
ভোক্তারা চাইছেন, এবার জাহাজ ভাড়া কমিয়ে আনা হোক, তেমনটি হলে ব্যবসায়ীদের কপাল পুড়তে পারে।
দেশে দ্রুতই বাড়ছে এলপিজির ব্যবহার। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে এলপিজি ব্যবহৃত হয়েছে ৪৪ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন। কয়েক বছরে ১২ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে।
জাইকার এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে ২০২৫ সালে ৩০ লাখ টন ও ২০৪১ সালে চাহিদা হবে ৬০ লাখ টন।