ঢাকা : করোনারভাইরাস প্রতিরোধে মুখে খাওয়ার ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক কমিয়েছে।
মলনুপিরাভির নামে এই ট্যাবলেটের মধ্যবর্তী ক্লিনিকাল ট্রায়ালে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ ওষুধটি করোনায় আক্রান্তদের দিনে দুইবার খেতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মারসিকে (Merck) বলেছে, ওষুধটির গবেষণার ফলাফল এতটাই ইতিবাচক যে বাইরের পর্যবেক্ষকদের ট্রায়াল বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এই ওষুধের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের আবেদন করবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান চিকিৎসা পরামর্শক ড. অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, এই ফলাফল ‘খুবই ভালো খবর’। কিন্তু যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন তথ্য পর্যবেক্ষণ করছে ততক্ষণ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য এই ওষুধটি তৈরি করা হয়েছিল। আর এমনভাবে তা তৈরি হয়, যেন ভাইরাসটির জেনেটিক কোডে ত্রুটি তৈরি করে, তাহলে সেটা শরীরে ছড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষা পাবে।
৭৭৫ জন রোগীর উপর চালানো গবেষণার বিশ্লেষণ বলছে, যাদের মলনুপিরাভির দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ৭.৩ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। বিপরীতে যারা মন ভালো রাখার জন্য ওষুধ নিয়েছিলো (প্লেসবো) বা ডামি পিল নিয়েছে তাদের ১৪.১ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মলনুপিরাভির নেওয়াদের কারোরই মৃত্যু হয়নি, তবে প্লেসবো দলের ৮ জন রোগী প্রাণ হারায়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়। তবে এখনও সেসব তথ্য পিয়ার রিভিউ বা পর্যালোচনা করা হয়নি।
করোনা ভ্যাকসিনগুলো তৈরি হয় ভাইরাসটির বাইরের স্পাইক প্রোটিনকে লক্ষ্য করে। আর এই পিল তৈরি হয়েছে একটি এনজাইমকে লক্ষ্য করে। যা ব্যবহার করে ভাইরাস নিজের কপি তৈরি করে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এর ফলে এটি নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও কাজ করবে যেটা ভবিষ্যতে বিস্তার লাভ করতেও পারে।
মারসিকের সংক্রামক রোগ আবিস্কার বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট দারিয়া হাজুদা বলেন, এই মহামারী শেষ করার জন্য যারা ভ্যাকসিন নেয়নি এবং যারা ভ্যাকসিনের রোগপ্রতিরোধে কম প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তাদের জন্য একটা অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা থাকা খুব জরুরি।
ট্রায়াল বলছে, ভালো ফল পেতে হলে প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলেই মলনুপিরাভির গ্রহণ করতে হবে। এর আগে এক গবেষণায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে গবেষণা চালিয়ে হতাশাজনক ফলাফল পাওয়া যায়।