ঢাকা : সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে শ্রমিকের প্রণোদনার নামে বাড়তি টাকা নিয়ে গেছে জেনারেল নেক্সট ফ্যাশন নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানা। শ্রমিকের একাউন্টের বিপরীতে আগের বেতনের চেয়ে বেশি দেখিয়ে এ টাকা নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের পরিদর্শনে বিষয়টি উঠে আসে।
কোভিড-১৯ মহামারীর প্রথম ঢেউ ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ঘোষিত অভিঘাত মোকাবিলায় শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য সরকার এই প্রণোদনা ঘোষণা করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে বিষয়টি উঠে আসে। পরিদর্শক দলের চিহ্নিত এ সব অনিয়ম দুর্নীতি, ত্রুতি-বিচ্যুতির সঙ্গে একমত পোষণ করে সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকরাও।
শ্রমিক কর্মচারিদের নির্দিষ্ট কিছু মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখ করে বেশি টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে। উল্লেখিত শ্রমিকরা ২০২০ সালে করোনার অভিঘাত পূর্ব মার্চ-এপ্রিল মাসে যে পরিমাণ বেতন উত্তোলন দেখানো হয় করোনাকালিন প্রণোদনা বিতরণ মাসে তার চেয়ে বেশি বেতন উত্তোলন দেখানো হয়েছে। জেনারেল নেক্সট ফ্যাশন নামে এই তৈরি পোশাক কারখানার সরবরাহ করা তালিকা ও বেতন কাঠামো অনুযায়ী সাউথইস্ট ব্যাংক শ্রমিকদের মোবাইল ফাইনান্সিং সার্ভিসের আওতায় এই প্রণোদনা বিতরণ করে।
২০২০ সালের মার্চ থেকে করোনাভাইরাস দেখা দিলে সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় তৈরি পোশাক কারখানা। এ সময় তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করে। পরবর্তিতে কয়েক দফায় বৃদ্ধি করে এ প্রণোদনা প্রায় দ্বিগুণ করা হয়। শ্রমিকদের মজুরির প্রণোদনা মালিকদের একাউন্টে দেওয়ার দাবি থাকলেও সরকার সরাসরি শ্রমিকদের একাউন্টে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এবং শ্রমিকদের পূর্বের মাসের সেলারি শিটের ভিত্তিতে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে মজুরি পাঠানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল পূর্বের মাসের সেলারি শিট পরীক্ষা করে এ ধরণের অনিয়মের সন্ধান পায়। তৈরি পোশাক কারখানাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমানের ব্যক্তিগত ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারেও গুরুতর অনিয়ম মিলেছে।
জেনারেল নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিব শেঠির ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করা হয়েছে। উল্লেখিত ক্রেডিট কার্ড প্রতিষ্ঠানের কাজে অর্থাৎ বৈদেশিক মূদ্রা নীতি বিভাগের প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহৃত হয়নি।
গ্রাহকের টাকা জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যাংকটির কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল। গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় কর্মকর্তাদের সতর্ক করতে অপরাধী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করার প্রয়োজন ছিল। যাতে কোন গ্রাহকের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে কোন শাখার কোন কর্মকর্তা অবহেলা না করে।
এটা একটি দৃষ্টান্তও হতে পারতো। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকের রংপুর শাখায় গ্রাহকের পে-অর্ডার এর ১৫ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট হিসাবে জমা প্রদান না করে আত্মসাৎ করা হলেও উক্ত জালিয়াতির বিপরীতে অদ্যবধি দোষী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।