কুড়িগ্রাম : সহপাঠীদের সঙ্গে বসে ক্লাস করার আনন্দ উপভোগের আগেই করোনার কারণে সারাদেশের মতো জিহানের (৭) বিদ্যালয়ও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কেটে গেছে দেড় বছরের বেশি সময়। গত ১৫ দিন আগে গাছ থেকে পড়ে তার হাত ভেঙে যায়। এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা আসে। রবিবার বিদ্যালয় খুলে দিলে সেই ভাঙা হাত নিয়ে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে হাজির হয় জিহান। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের বুড়িরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ে জিহান। বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার শাহিদুল-জেসমিন দম্পতির ছেলে সে। হাত ভাঙা সত্ত্বেও মা-বাবাও তার উৎসাহে ভাটা পড়তে দেননি।জিহানের বাবা বলেন, দুই সপ্তাহ আগে বিদ্যালয়ের মাঠে খেলতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে জিহানের বাম হাত ভেঙে যায়। এখনও তার চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তবে বিদ্যালয় খোলার খবরে সহপাঠীদের সঙ্গে সেও যাওয়া আগ্রহ দেখায়। সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হয়ে বেশ আনন্দিত জিহান। বুড়িরভিটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নূরন্নবী জানান, তার বিদ্যালয়ে মোট ১৯০ জন শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বেশ উচ্ছ্বসিত। তবে আজকে সব ক্লাসের শিক্ষার্থীদের আসার নির্দেশনা না থাকলেও, প্রতিটি ক্লাসের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। যাদের আজ ক্লাস নেই, তাদের ক্লাস রুটিন দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। জেলার একাধিক প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের প্রথম দিনের ক্লাসে বরণ করে নিচ্ছেন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের মাঝে মাস্ক সরবরাহ করতেও দেখা গেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। দলদলিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোন্নাফ আনছারি জানান, প্রথম দিন বিদ্যালয়ে মোট ১৭০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬০ শতাংশ উপস্থিত হয়। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা বেড়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।