নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপে অবস্থিত সজীব গ্রুপের হাসেম ফুডস‘র সেজান জুস কারখানায় গত ৮ জুলাই অগ্নিকান্ডে কমপক্ষে ৫২ জন শ্রমিকের মৃত্যু, অর্ধশতাধিক শ্রমিক মারাত্মক জখম এবং শতাধিক শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনায় প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও দায়িদের চিহ্নিত করতে স্কপ কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটি ৮ সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে। কমিটির পর্যবেক্ষণ শেষে বলা হয়, সেজান জুস কারখানায় নানা গুরুতর অসঙ্গতি দৃশ্যমান হয়েছে যার দায় মালিকপক্ষ, অগ্নি নির্বাপণ কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার প্রশাসন, শ্রম দপ্তর, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর কোনভাবেই এড়াতে পারে না।
৮ ই সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬ টায় ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা কার্যালয়ে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) বগুড়ার এ সম্পর্কিত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্কপ বগুড়ার আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বগুড়া জেলার সভাপতি শ্রমিক নেতা মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে এবং সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়ার সভাপতি সাইফুজ্জামান টুটুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুর রহমান, সদস্য জিন্নাতুল ইসলাম, সদস্য আব্দুল মান্নান, জাতীয় শ্রমিক লীগ বগুড়ার সহ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম খান, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক ও কর্মচারী দল বগুড়ার সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল কবির, স্কপ বগুড়ার সদস্য আমিনুল ইসলাম, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ বগুড়ার সভাপতি ইনছান আলী, অর্থ সম্পাদক মতিউর রহমান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বগুড়ার সভাপতি আব্দুল জলিল, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বাবলু, জাতীয় শ্রমিক জোট বগুড়ার সদস্য আব্দুল মোমিন মন্ডল প্রমুখ।
সভা থেকে সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনার প্রেক্ষিতে নিম্নে উল্লেখিত ৫ দফা দাবি এবং দাবি আদায়ে প্রাথমিক কর্মসূচী ঘোষণা করা হয় এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত স্কপ নিরবিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে নেতৃবৃন্দ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দাবিসমুহ-
১। সুষ্ঠ তদন্ত ও সঠিক কারণ উদঘাটনের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
২। সেজান জুস কারখানায় শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য দায়ী মালিকপক্ষ এবং কর্তব্য অবহেলার জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের শাস্তি দিতে হবে।
৩। মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকদের আই এল ও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে হাই কোর্টের নির্দেশনা এবং রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের হারকে বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে।
৪। ক্ষতিপূরণের একই হারে আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকা অবস্থায় কর্মহীন শ্রমিকদের মজুরী প্রদান করতে হবে।