ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। তিনি দলের মধ্যে থেকেই বিভিন্ন পদে ধারাবাহিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। নির্বাসনে থেকেও তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, দলকে সুসংগঠিত করছেন। তাই দলের নেতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। তিনিই আমাদের দলের নেতা। তার নেতৃত্বেই আগামীতে আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালিত হবে। সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরস্থ কালিবাড়ির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। শহীদ জিয়ার কবর নিয়ে তিনি বলেন, এ ইস্যুটিই একটি কু-রুচিকর ও অরাজনৈতিক ইস্যু। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং শাহাদাৎ বরণের পর সেনাবাহিনীর তত্বাবধানেই ময়নাতদন্ত করে তাকে দাফন করা হয়েছে। এটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। এ বিষয়টি ধ্রুবতারার মতো সত্য। লুই কানের নকশাটি ছিল পাকিস্তানী আমলের। এ নকশায় উপর থেকে লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন এখানে পাকিস্তানের পতাকার চাঁদ তারার নকশা রয়েছে। আইয়ুব খানের আমলে এটিকে সেকেন্ড কেপিট্যাল করার চিন্তাধারা ছিল। এর পরে তো অনেক পরিবর্তন হয়েছে। গণভবন, স্পিকারের ও ডিপুটি স্পিকারের বাসা তৈরি হয়েছে। মেট্রোরেলের বিশাল একটা অংশ এতে ঢুকেছে। দেশের জনগণকে ভিন্ন পথে পরিচালনা করতেই শহীদ জিয়ার কবর নিয়ে ইস্যু তৈরি করছে সরকার। করোনা, ডেঙ্গু ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ফেইলিওর। মানুষের আসল সমস্যা নিয়ে মনোযোগ না দিয়ে ভিন্ন পথেই চিন্তাভাবনাকে পরিচালনা করছে তারা। বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন মহলের কথার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিভিন্ন সময়ে চড়াই উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বরণের পর অনেকেই মনে করেছিল বিএনপির অবস্থা বোধ হয় শেষ। কিন্তু বিএনপি উঠে দাঁড়িয়েছিল এবং তিন তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনায় এসেছে। গত ১২ বছর ধরে দেশ বড় ধরনের রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে গণতন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের যে অর্জন ছিল আওয়ামী লীগ সরকার তা নষ্ট করেছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বলতে গিয়ে আমি বলবো, সব ধরনের নির্বাচনের ওপরে দেশের মানুষের আস্থা উঠে গেছে। বিগত সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই আমরা এর প্রতিফলন দেখেছি। গণতন্ত্রের প্রথম যে স্তম্ভ, সেটিকেই সরকার অবৈধভাবে নিজেদের মতো করে পরিচালনা করে অবৈধভাবেই ক্ষমতায় বসে রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কথা শুনলে মনে হয়- তিনি সরকারের সকল চাওয়া-পাওয়া, আদেশ নিষেধ মানার জন্যেই বসে রয়েছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা যাব কি না দলগতভাবে আমরা সে সিদ্ধান্ত এখনো নেইনি। সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সহ-সভাপতি নূর-এ শাহাদাৎ স্বজন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, দফতর সম্পাদক মামুন অর রশিদসহ দলের অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।