দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করাই বিএনপির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরস্থ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি দীর্ঘ ৪৩ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করে আজকে ৪৪ তম বছরে পা রেখেছে। ৪৩ বছরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বাংলাদেশের রাজনীতিতে মৌলিক কতগুলো অবদান রেখেছে। এখন বিএনপির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এদেশে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা এবং গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রত্যাবর্তন করেছেন। পরবর্তীতে গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এদেশে প্রেসিডেন্সিয়াল সরকার ব্যবস্থা থেকে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় এসেছে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা, মৌলিক স্বাধীনতা, কথা বলার অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে ছিলেন। তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে ছিলেন। অর্থাৎ বহু দলীয় গণতন্ত্রের যে কাঠামো সেই কাঠামো নির্মাণ করেছিলেন। একই সাথে তিনি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলেন। তথা কথিত সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা থেকে একটি মুক্ত অর্থ বাজার সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ আজকে বাংলাদেশের যত রকম অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে তার মূল ভিত্তি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্যারের হাত ধরে হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রুরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার পর অনেকে ভেবেছিলো বিএনপি হয়তো শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু তার যোগ্য উত্তরাধিকারী, গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের পতাকা তুলে ধরেছিলেন। সেই পতাকা নিয়ে তিনি আপোষহীনভাবে দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। দুর্ভাগ্য এই জাতির আজকের সেই নেত্রী ফ্যাসিবাদের নির্যাতনে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী হয়ে আছেন।
ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্য এ জাতির বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এ জাতি যে অধিকারগুলো পেয়েছিলো আজকে তা হারিয়ে ফেলেছে। আজকে জনগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আজকে নির্বাচন হয় না। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। সার্বিকভাবে একটি ছদ্মবেশী একদলীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তাই এখন বিএনপির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এদেশে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা ও গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।